শেকৃবির সার্জনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ফি ও বেসরকারি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহারের অভিযোগ

  © টিডিসি ফটো

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ভেট সার্জন হিসেবে নতুন নিয়োগ পেয়েছে ডা. রুপ কুমার। নিয়োগ পেয়েই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রেসক্রিপশনে হাসপাতালের নিজস্ব প্যাড ব্যবহার না করে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করাসহ নানারকম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে ভেট সার্জন ডা রুপ কুমারের বিরুদ্ধে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিক ও টিচিং হাসপাতালটি চালু হয় গতবছর মে মাসে। সেখানে গত ১৯ ডিসেম্বর স্থায়ীভাবে একজন ভেট ডাক্তার হিসেবে ডা রুপ কুমারকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের পর থেকেই আগত বিভিন্ন পোষা প্রাণী ও গবাদি পশুর চিকিৎসা করে আসছেন নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. রূপ কুমার। কিন্তু প্রেসক্রিপশনে করছেন 'ভেট এন্ড পেট কেয়ার' নামে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের প্যাড। সেখানে চিকিৎসক রূপ কুমারের নাম, ফোন নাম্বার ও ক্লিনিকের ঠিকানা ঢাকার লালমাটিয়া উল্লেখ করা৷ হাসপাতালটিতে কর্মরত একাধিক ইন্টার্ন ভেট ডাক্তার এবং সেবাগ্রহীতার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন যাবত বেসরকারি ক্লিনিকটির সাথে জড়িত। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃক নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিকে সরেজমিনে দেখা যায়, গবাদিপশু (ছাগল) চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তির থেকে ভিজিট বাবদ নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা এবং মাইনর সার্জারি খরচ বাবদ নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। অথচ অফিস আদেশ অনুযায়ী গবাদিপশু চিকিৎসায় রেজিস্ট্রেশন (ভিজিট) বাবদ ব্যয় ৫০ টাকা এবং মাইনর সার্জারি বাবদ ব্যয় ১০০ টাকা হওয়ার কথা। অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার ফলে সেবা নেওয়া ব্যক্তিদের প্রশ্ন উঠেছে নাগরিক সেবা নাকি অতিরিক্ত মুনাফা লাভই ক্লিনিকের মূল উদ্দেশ্য। 

এএসভিএম অনুষদের একাধিক শিক্ষক বলেন, সরকারি হাসপাতালে সেবা প্রদানের একটা নির্ধারিত মূল্য তালিকা থাকে। এর বাইরে ফি আদায় নিঃসন্দেহে একটি অন্যায় কাজ। শুনেছি আমাদের ভেটেরিনারি টিচিং হাসপাতালে ৩০০ টাকা ভিজিট সহ অন্যান্য সার্ভিসিং চার্জ রাখা হচ্ছে যা কর্তৃপক্ষের ধার্যকৃত মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি। এছাড়াও সরকারি হাসপাতালে প্রাইভেট ক্লিনিকের ব্যবস্থাপত্রে প্রেসক্রিপশন করা বেআইনি। হাসপাতালের নাম ঠিকানা সম্বলিত নিজস্ব ব্যবস্থাপত্র থাকা উচিত। যদি না থাকে সেক্ষেত্রে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন করে অফিসারের নাম পদবি সম্বলিত সিল থাকা উচিত।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. রুপ কুমার বলেন, এখন পর্যন্ত ভিজিট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। ডিন স্যারের নির্দেশক্রমে ৩০০ টাকা ভিজিট এবং ঔষধ, সার্জারির জন্যে যথা অনুযায়ী টাকা নিচ্ছি। ডিন স্যারের নির্দেশেই স্যারের ব্যক্তিগত ক্লিনিকের প্যাড ব্যবহার করছি। 

তবে এবিষয়ে এএসভিএম অনুষদের ডিন ড কে বি এম সাইফুল ইসলাম অস্বীকার করে বলেন, আমি প্যাড ব্যবহার করতে আমার ক্লিনিকের কথা বলি নাই। ২০২০ সালে একটি মূল্য তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছিল সে অনুযায়ী টাকা নেওয়া হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ