তবে ঢাবিতে ভর্তিচ্ছু তরুণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ও জানান তিনি।
এক গণমাধ্যমকে বেলায়েত বলেন, “পরীক্ষা দিয়ে আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। বয়সের তুলনায় ভালোই পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু ইয়াং জেনারেশনের সঙ্গে কতটা পারব..., তা আল্লাহর উপর ভরসা।”
পরীক্ষা শেষে তিনি বাকি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার তো শেষ বয়স, আমি একা সাগর পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি; আমার সঙ্গে যারা পরীক্ষা দিয়েছে তারা একটা ছোট্ট খাল পাড়ি দিয়েছে।
এইচএসসির বিভাগ পরিবর্তনের এই ইউনিটে বেলায়েত শেখ বাণিজ্য বিভাগ থেকে অংশগ্রহণ করেছেন। তার ভর্তি পরীক্ষার আসন পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ভবনে।
সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরের বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট আসন ১ হাজার ৩৩৬ আসনের বিপরীতে ৭৮ হাজার ৪৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। সেই হিসেবে আসনপ্রতি লড়েছেন ৫৮ জন ভর্তিচ্ছু।
উল্লেখ্য, আর্থিক দুরবস্থা ও বাবার অসুস্থতার কারণে ১৯৮৩ সালে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর লেখাপড়া থেকে ছিটকে গিয়ে সংসারের হাল ধরেছিলেন বেলায়েত শেখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে নিজের ‘অপূর্ণতা’ তিনি পূরণ করতে চেয়েছিলেন ভাই-বোনদের মাধ্যমে, পরবর্তীতে সন্তানদের দিয়ে। কিন্তু তা পূরণ না হওয়ায় আক্ষেপ নিয়ে তিনিই আবার পড়ালেখা শুরু করেন।
২০১৭ সালে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদরাসা থেকে ৪ দশমিক ৪৩ জিপিএ নিয়ে তিনি এসএসসি (ভোকেশনাল) পাস করেন। এরপর ২০২১ সালে রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে জিপিএ ৪ দশমিক ৫৮ পেয়ে পাস করেন এইচএসসি (ভোকেশনাল)।
এরপর থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। গত ১৯ মে বেলায়েত শেখ তার ফেসবুক আইডিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করলে তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।
বেলায়েতের জন্ম ১৯৬৮ সালে; শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিম খণ্ড এলাকায় স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। দৈনিক করতোয়া প্রত্রিকায় শ্রীপুর প্রতিনিধি হিসেবে তিনি কাজ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলে তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।