বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধে ক্ষুব্ধ ভর্তিচ্ছুরা, সভা ডেকেছে কমিটি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৩০ AM , আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৩৯ AM
গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ষষ্ঠ মেধাতালিকায় ভর্তি কার্যক্রম চলছে। মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হয়ে যা চলবে ২১ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে গিয়ে এ পর্যায়ের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এরপর সপ্তম মেধাতালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশেন বন্ধ থাকবে। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) ভর্তি কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে ভর্তিচ্ছুরা গুচ্ছভুক্ত এক বা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হলে তাকে অবশ্যই তার পছন্দমত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাথমিক ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় গুচ্ছভুক্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না।
এই পর্যায় থেকে প্রাথমিক ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে না (বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ)। ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিভাগ পছন্দক্রম ও মেধা স্কোরের ভিত্তিতে প্রযোজ্যক্ষেত্রে বিভাগ মাইগ্রেশন চলমান থাকবে।
এদিকে, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভর্তিচ্ছুদের একাংশ। তারা বলছেন সপ্তম মেধাতালিকা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ করে দিলে তারা তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হারাবেন। কমপক্ষে ১০ম মেধাতালিকা পর্যন্ত মাইগ্রেশন চালু রাখার দাবি তাদের। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে তারা নতুন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জামিউল জামিল নামে এক ভর্তিচ্ছু অভিযোগ করে বলেন, গুচ্ছে সপ্তম মেরিট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তুষ্টি তৈরি হয়েছে। এরকম করা হলে আমাদের মধ্যে তুলনামূলক মধ্যম মার্কস পাওয়া শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং অসামঞ্জস্যতা তৈরি হবে। আমরা পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ মেরিট এ যে প্রক্রিয়া বহাল ছিল তা সপ্তম মেরিট থেকে শেষ অবধি পর্যন্ত বহাল চাই।
মো. নয়ন আলী সেখ বলেন, আমি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় মানবিক থেকে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমি প্রাথমিকভাবে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়াতে ভর্তি আছি। কিন্তু আমার বাসা টাঙ্গাইল। আমার টাঙ্গাইলের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার মেধাক্রম-৯২। সেখানে ৫ম মেধাতালিকা শেষে ৮১ মেধাক্রম পর্যন্ত বিষয় পেয়েছে। আর ২ মেধাতালিকা হলে আমি সাবজেক্ট পেতাম। কিন্তু ৭ম মেধাতালিকা থেকে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেটা হতাশাজনক।
তিনি বলেন, এমন হলে আমার আর পড়াশোনা করা হবে না। অনেক আশাবাদী হয়ে ২য় বার পরীক্ষা দিয়েছিলাম। এমন চিত্র প্রায় অধিকাংশ ভর্তিচ্ছুর।
আও পড়ুন: আসন ফাঁকা, ৩১৪ জনকে ডেকেছে কৃষিগুচ্ছের ৫ বিশ্ববিদ্যালয়
ষষ্ঠ মেধাতালিকা পর্যন্ত প্রাথমিক ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সোমবারের বিজ্ঞপ্তিতে ভর্তি কমিটি জানিয়েছে, আবেদনকারী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি থাকা অবস্থায় অন্য এক বা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হলে তার পছন্দমত অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইগ্রেশন (University Migration) আগামী ২১ ডিসেম্বর রাত ১২টার মধ্যে অনলাইনে সম্পন্ন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে পূর্বের বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইগ্রেশন সম্পন্ন করলেও মূল কাগজপত্র যে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা আছে সেখানেই থাকবে। এছাড়া গুচ্ছভুক্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে প্রাথমিক ভর্তি সম্পন্ন করে থাকলে পুনরায় ভর্তি হতে হবে না।
সপ্তম মেধাতালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের নির্দেশনায় ভর্তিচ্ছুদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাছিম আখতারকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম এমনিতেই লেন্থি (দীর্ঘ) হয়ে গেছে। আমরা আর সময় নিতে চাইনি বলেই সপ্তম মেধাতালিকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ভর্তি কার্যক্রম যত দ্রুত সম্ভব শেষ করে ক্লাস শুরুর পরিকল্পনা ছিলো আমাদের। এখন যেহেতু ভর্তিচ্ছুরা নিজেরাই চাচ্ছে; তাদের বৃহত্তর স্বার্থের বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এ বিষয়ে আগামী দুএকদিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো।
অধ্যাপক নাছিম আখতার, ভর্তিচ্ছুদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি সভা আহ্বান করেছি। ভর্তি কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে তাদের উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হবে। আমরা ভর্তিচ্ছুদের আশ্বস্ত করছি, ভর্তি কমিটির সমন্বিত সভায় নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যেসব ভর্তিচ্ছু ৬ষ্ঠ মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন, তাদের ভর্তি কার্যক্রম আপাতত সম্পন্ন করতে হবে।