সন্তানের এসএসসি পরীক্ষা, অভিভাবকের করণীয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৩ PM , আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৬ PM

চলতি বছরের এসএসসি/দাখিল ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে। পরীক্ষার্থীদের এখন চলেছে রিভিশন পর্ব। পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার্থীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে শিক্ষকের পাশাপাশি অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। এ সময় অভিভাবকেরও রয়েছে নানা করণীয়। যাতে সন্তানরা বিচলিত বা ভীতিকর পরিস্থিতিতে না পড়ে।
মাধ্যমিক পর্যায়ের এই পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের জীবনের অন্যতম প্রথম ধাপ। এর মধ্য দিয়েই উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে যায়। তাই সন্তানকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে অভিভাবকের থাকতে হয় সজাগ দৃষ্টি। সন্তানকে পড়াশোনার ভালো পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার পাশাপাশি তাকে সাহস জোগানো, তাদের মনকে সতেজ রাখা, সময়মতো খাবার গ্রহণ করানো, নিয়মিত ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হতে পারে আপনার সন্তানের ভালো রেজাল্টের উপাদান। তবে এখন যেহেতু ডিজিটাল যুগ, তাই মোবাইল-টিভিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সে দূরে আছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে।
এ ছাড়া যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে খেয়াল রাখতে হবে, তা হলো
নিয়মিত পড়া
সব সময় পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সময়মতো পড়াশোনা করে কিনা সন্তান, খেয়াল রাখতে হবে। খেলাধুলার জন্যও সময় বের করে দিতে হবে। নিজেকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে যত ধরনের সহযোগিতা সন্তানদের করে দিন। তাহলেই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল সম্ভব।
অতিরিক্ত চাহিদা
মানুষমাত্রই নানা চাহিদা থাকবে। এক মানের ফলাফলের পর তার চেয়ে আরও উন্নতি করার কথা যেমন পড়ুয়াটি ভাবে, তেমনই আশায় বুক বাঁধেন অভিভাবকরাও। আর সেই আশা কখন আকাঙ্খায় পরিণত হয়, তা তাঁরা বুঝতেও পারেন না। এই আকাঙ্খা কখনই যাতে মাত্রাছাড়া না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে অভিভাবকদের।
তুলনা
অন্য ছাত্রছাত্রীদের বা বন্ধুদের সঙ্গে তুলনা করা মানসিক চাপ বাড়ার অন্যতম আরেকটি কারণ। বারবার অন্য বন্ধুর ফল কত ভালো হয়েছে, সে কত ভালো বোঝে, এসব উদাহরণ তুলে ধরলে সন্তান উৎসাহ তো পাবেই না, বরং তার ওপর প্রবল চাপ তৈরি হবে। এটা কখনোই উৎসাহ দেওয়ার বা বৃহত্তর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার কোনো মাধ্যম হতে পারে না। তাকে তার গণ্ডির মধ্যে বুঝতে সহযোগিতা করতে হবে।
আগের রাতে করণীয়
রাত পোহালেই পরীক্ষা, এমন চিন্তা থেকে দূরে রাখতে পরীক্ষার আগের দিন যাতে যথেষ্ট বিশ্রাম আর যথেষ্ট ঘুম হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। পরীক্ষার হলে আপনার সন্তান যেন একেবারে তরতাজা শরীর নিয়ে যেতে পারে, এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
খাবার-দাবার
পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে যাতে আপনার সন্তান পেট ভরে খাবার খেয়ে যেতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখুন। পরীক্ষার আগে সবাই চাপে থাকে। তাই কয়েক ঘণ্টা আগে আবার রিভিশন দেওয়ার কথা বললে তার ওপর চাপ বাড়বে। বরং অভিভাবক যদি কোচের মতো খাবার-দাবারে কিছুটা কৌশলী হন, তাহলে খোলা মনে সন্তান পরীক্ষা দিতে পারবে।
পরীক্ষা হল থেকে বের হওয়ার পর
পরীক্ষা দিয়ে আসার পর আর তা নিয়ে আলোচনা করার দরকার নেই। একটু-আধটু জানতে পারেন, বেশি কিছু জানতে হবে না। সন্তানকে পরের পরীক্ষার বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে উৎসাহিত করুন।
অসাধু চক্রের কবলে না পড়া
যেকেনো পরীক্ষার সময় নানা রকম অসাধু চক্র গড়ে ওঠে। কোচিং সেন্টার থেকে শুরু করে অনেকেই প্রশ্নফাঁস করে থাকে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রশ্ন ফাঁস ও নকল থেকে সন্তানকে দূরে রাখা এবং দৃষ্টি রাখতে হবে তাকে কেউ মোটিভেট করে কি না। শিক্ষার্থীরা যেন কোনো কোচিং সেন্টার কিংবা অসাধু চক্রের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস এ জড়াতে না পারে, তাদের লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বোঝানো।
আবার অনেক সময় শোনা যায় অভিভাবক নিজেই প্রশ্ন সংগ্রহ করতে লেগে যান। যা তার সন্তানের নৈতিকতা শিক্ষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। এর দ্বারা, মেধার অবমূল্যায়ন করা হয়।