শৈবাল থেকে রঞ্জক, অ্যাগার ও সেলুলোজ উৎপাদনে বাকৃবির যুগান্তকারী সাফল্য

২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৯ PM
টিডিসি সম্পাদিত

টিডিসি সম্পাদিত © টিডিসি

সামুদ্রিক শৈবালভিত্তিক বায়োরিফাইনারি প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামুদ্রিক আগাছা (সি উইড) থেকে উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। এ গবেষণায় সহযোগিতা করেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি)। গবেষকদের মতে, এই উদ্ভাবন বাংলাদেশের নীল অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে গ্র্যাসিলারিয়া টেনুইস্টিপিটাটা (Gracilaria tenuistipitata) নামের সামুদ্রিক শৈবাল (সী উইড)। এই শৈবাল থেকে পর্যায়ক্রমে তিনটি মূল্যবান উপাদান রঞ্জক পদার্থ, অ্যাগার (জেল-উৎপাদক উপাদান) ও সেলুলোজ—সফলভাবে নিষ্কাশন করা হয়েছে। বায়োরিফাইনারি প্রযুক্তির বিশেষত্ব হলো,শৈবালের প্রতিটি অংশই ব্যবহৃত হয়; ফলে বর্জ্য তৈরি হয় খুব কম। এটি স্বভাবতই একটি পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়া।

‘সামুদ্রিক শৈবালভিত্তিক বায়োরিফাইনারি প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চমূল্যের পণ্য উন্নয়ন’ শীর্ষক এই উপ-প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রাণালয়ের ‘মৎস্য অধিদপ্তরের অধীন ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের (এসসিএমএফপি)’ অর্থায়নে। সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়াই গবেষণার মূল লক্ষ্য।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে ওই গবেষণা প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক এবং বাকৃবির প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হান্নান।

তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাপে জলীয় পদ্ধতিতে শৈবাল থেকে ফাইকোবিলিপ্রোটিন রঞ্জক সংগ্রহ করা হয়। এতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহরোধী গুণ রয়েছে। এই প্রাকৃতিক রঞ্জক দইসহ বিভিন্ন খাদ্যে ব্যবহার করা যায় এবং স্বাদ, গন্ধ, রং ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়ায়। এরপর বাকি থাকা অংশ থেকে অ্যাগার উৎপাদিত হয়েছে। এর পরিমান পাওয়া গেছে প্রায় ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। শেষে যে অংশটি অবশিষ্ট থাকে, তা থেকে সেলুলোজ সংগ্রহ করে গ্লিসারিন, অ্যাগার ও জিলেটিনের সঙ্গে মিশিয়ে একটি শক্তিশালী, অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধী ও জৈব-বিয়োজ্য বায়োফিল্ম তৈরি করা হয়েছে। এই বায়োফিল্ম প্যাকেজিং ও বায়োমেটেরিয়াল শিল্পে ব্যবহারের উপযোগী।’

গবেষক ড. হান্নান আরও জানান, গবেষণার কার্যক্রম শুরু হয় ২০২৪ সালের শুরুর দিকে। সহযোগী গবেষক হিসেবে পবিপ্রবির ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হক।

সমাপনী কর্মশালায় প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শায়লা শারমিনের সভাপতিত্বে ও লেকচারার খাদিজা খাতুনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসসিএমএফপি প্রকল্পের উপ-পরিচালক মো. মেজানুর রহমান, কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জি এম মুজিবুর রহমান এবং বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমান।

উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই উন্নয়নের জন্য নীল অর্থনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাকৃবির এই গবেষণা সামুদ্রিক সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখবে।

অত্যন্ত সংকটময় সময় অতিক্রম করছেন বেগম খালেদা জিয়া: ডা. জাহিদ
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
সহকর্মীর গুলিতে আনসার সদস্য নিহত, অভিযুক্ত আটক
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর ছাত্রদল প্যানেলের কাছে ফা…
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ঢাবির হলে বহিরাগত থাকলে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
কুড়িগ্রাম জেলা যুবদল সভাপতির মৃত্যু
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫
রাতে এভারকেয়ারে তারেক রহমানসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠরা
  • ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫