জাবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেশন বেনিফিট বাতিল

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়   © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সেশন বেনিফিটের সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ জুন) অনুষ্ঠিত ৩৯ তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে এ সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। সিনেট অধিবেশনের আলোচ্যসূচির ৯ নং এজেন্ডাভুক্ত বিষয়ে সিনেট সদস্যদের পর্যালোচনা ও সম্মতির প্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় স্ট্যাটিউটসের ১৪ ধারার উপধারা ১ ও ২ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

 বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় স্ট্যাটিউটসের ১৪ (১) ধারায়  কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়স সম্পর্কে বলা হয়েছে, "শিক্ষক ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল চাকুরীজীবি ৬২ বছর বয়সে ওই সেশনের শেষে অবসরে যাবেন"। ১৪ (২) ধারায় শিক্ষকদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, "বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ৬৫ বছর বয়সে ওই সেশনের শেষে অবসরে যাবেন।"

আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুতে কাজ করা একমাত্র বাঙালি নারী প্রকৌশলী ইশরাত

অর্থাৎ আগের সংবিধি অনুযায়ী একজন শিক্ষকের বয়স ১লা জুলাই ৬৫ বছর এবং একজন কর্মকর্তার বয়স  ৬২  বছর হলেও তাঁরা ওই সেশনের শেষে অর্থাৎ পরের বছরের ৩০ জুন অবসরে যাবেন। 
তবে সংশোধিত সংবিধি অনুযায়ী শিক্ষকদের বয়স ৬৫ বছর ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের বয়স ৬২ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনই তাদের অবসর গ্রহন করতে হবে।

 ১৯৯৩ সালের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জন্য প্রথম সেশন বেনিফিট চালু হয় বলে জানা গেছে। পরে বাকি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও একই নিয়ম চালু করে।

সেশন বেনিফিটের কারণে প্রতিবছর কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে সরকারকে। এ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবসরের বয়স সম্পর্কিত ২০১২ সালের ২৯ নং আইন অনুযায়ী  বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিশ্ববদ্যালয় সেশন বেনিফিট বাতিল করে।

বিষয়টি অনুসরণ করে গত বছরের ২৮ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় ‘সেশন বেনিফিট’ বাতিল করার সুপারিশ করা হয়, যা নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তীতে সিনেট সভায় অনুমোদন করে বাস্তবায়ন করতে হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম 'কাছের' লোকদের প্রশাসনে রাখার জন্য সিনেট আহ্বান করে নি।


এ নিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসে চলতি বছরের ৩০ মার্চ ‘‘জাবিতে ‘সেশন বেনিফিট’-এ প্রতি বছর কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়’’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। 

সেসময় নিয়োগ  কার্যক্রম, শিক্ষক ও কর্মকর্তা সমিতির নির্বাচন সহ অন্যান্য মিটিং অনলাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা চললেও অনলাইনে অথবা সশরীরে কোনভাবেই সিনেট মিটিং না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ বেগম বলেন, ‘সেশন বেনিফিট বাতিল করার নির্দেশ দিলেও যেহেতু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটি বাতিল করে নি, বাজেটে সেশন বেনিফিটে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি অর্থ বিভাগ দেখবে।’

পরে উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম বলেন, আশা করছি আগামী সিনেট অধিবেশনে সেশন বেনিফিট বাতিল হবে।


সর্বশেষ সংবাদ