রাবির বিদ্যুতে আলো জ্বলছে অবৈধ দোকানে, জানে না প্রশাসন

রাবির বিদ্যুতে আলো জ্বলছে অবৈধ দোকানে
রাবির বিদ্যুতে আলো জ্বলছে অবৈধ দোকানে  © টিডিসি ফটো

উপরে জ্বলছে বাতি, নিচে চলছে ফ্যান। আবার দোকানের চারপাশে লাগানো হয়েছে ঝাড়ক বাতি। সন্ধ্যা নামতেই আলোর ঝলকানিতে মনে হবে- এতো দোকান নয়, যেন বাসর ঘর! প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এমনি চিত্র চোখে পড়বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটসহ সিরাজী ভবন ও শহীদুল্লাহ্ কলা ভবনের আমতালার সামনের কিছু দোকানে।

বিশ্ববিদ্যালয় দাপ্তরিক কোন আদেশ ছাড়াই অবৈধভাবে ক্যাম্পাসে গড়ে উঠেছে এমন অনেক ভাসমান দোকান। যারা দিনে-রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা ব্যবসা। এরকম দোকানের সংখ্যা কমপক্ষে ১০টি। কিন্তু এ বিষয়ে কিছুই জানে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, ছাত্রসংগঠনের নেতাদের উপর ভর করেই ক্যাম্পাসের যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এসব ভাসমান দোকান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এসব দোকানের বৈধ কোন অনুমতি নেই। দোকানগুলো সকালে খোলা হয় এবং বন্ধ হয় প্রায় রাত ১০টার দিকে।

বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা বলেন, এই বিদ্যুৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইন থেকে নেয়া। এগুলোর কোন অনুমতি নেই। তবে সন্ধ্যার পরে অনেক শিক্ষকরা চা খেতে বসেন, তাই ঘণ্টা খানেক সময় বাতি জ্বালায়। তাছাড়া মোমবাতি জ্বেলে তো দোকানদারি করা কষ্টকর। শিক্ষকদের বলেই বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।

আরও পড়ুন: রাবিতে চূড়ান্ত আবেদন শুরু

তবে অভিযোগ রয়েছে, এসব ভাসমান অনেক দোকানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই খাবার পরিবেশন করাসহ অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হয়। যা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মাঝেমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে। এছাড়া অধিক মূল্যে খাবার বিক্রি করায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই খাবার কিনছেন শিক্ষার্থীরা।  

এসব দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে জানতে প্রকৌশল দপ্তরে যোগাযোগ করা হলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভাসমান এমন কোন দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে কিনা, এবিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ক্যাম্পাসের কোন দোকানে বিদ্যুৎ সংযোগ করার ক্ষেত্রে এস্টেট দপ্তরের অনুমোদন নিতে হয়। সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা মেরামতের জন্য কোন সুপারিশ আসলে কেবল সেটা আমরা দেখভাল করি।

জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার জাহিদুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পাসে এসব ভাসমান দোকান বসার কোন অনুমতি নেই। কিন্তু বিভিন্ন জনকে ধরে ক্যাম্পাসে এসব দোকান গড়ে তুলেছে দোকানিরা। বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি আমার দপ্তরে নয়, প্রকৌশল দপ্তর দেখে। তাছাড়া ক্যাম্পাসে এমন ভাসমান দোকান নিয়ন্ত্রণে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। শিগগিরই এবিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করে দোকান চালানো অন্যায়। তাছাড়া ক্যাম্পাসে এসব দোকান বসার বৈধ কোন অনুমতি নেই। তাই তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহার করার তো প্রশ্নই ওঠে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবিহিত করে ব্যবস্থা নেব।


সর্বশেষ সংবাদ