মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেট-সিন্ডিকেটেই চলছে জাবি
মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন পর্ষদের উপর ভর করে চলছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে শেষ হয় বিভিন্ন পর্ষদের মেয়াদ। বহুবার উপাচার্যকে এ দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দিলেও উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে আগামী ২ মার্চ উপাচার্যের দ্বিতীয় মেয়াদও শেষ হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন, সিন্ডিকেট, সিনেট হতে সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষা পর্ষদ, অর্থ কমিটি, সিনেটে রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি এবং সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি পর্ষদগুলোর মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলায় আপত্তি নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি এবং সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনতিবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ সকল গণতান্ত্রিক পর্ষদের নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ১৯৭৩-এর অ্যাক্ট, অর্ডিন্যান্স ও সংবিধির প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, ‘বহুবার নানাভাবে বর্ততমান উপাচার্যকে নিয়মানুযায়ী নিরবাচনের বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দিলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিয়ম-নীতিরই তোয়াক্কা করছেন না। দীর্ঘদিন ধরে সিনেট, সিন্ডিকেট, শিক্ষা পর্ষদ, ডীন ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও বিধি মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো চেষ্টাই তিনি করেননি।'
উপাচার্যের প্যানেল নির্বাচনের আয়োজন না করাকে ‘অনৈতিকভাবে ও ছলচাতুরী’ করে পদ আঁকড়ে থাকার ‘দূরভিসন্ধিমূলক’ কর্মকাণ্ড বলে এতে দাবি করা হয়।
অ্যাক্টের সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী, পর্ষদগুলোর মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে শেষ হয় সিনেট হতে সিন্ডিকেট সদস্যের মেয়াদ। এরপর মে ২০১৮তে ডীন, ২০১৮’র জুনে সিন্ডিকেট, শিক্ষা পর্ষদ, অর্থ কমিটি এবং একই বছরের অক্টোবর মাসে সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে মেয়াদ শেষ হয় সিনেট রেজিস্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিদের।
আরও পড়ুন: মোবাইলে কথা বলতে বলতে শিক্ষার্থীকে ৪ ডোজ টিকা দিলেন নার্স
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘উপাচার্য নির্বিচারে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন। একটি বিশেষ মহলের নিয়োগ-বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক অনাচারের পথ সুগম করে দেয়াটাই বর্তমান প্রশাসনের একমাত্র লক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে?’
বিজ্ঞপ্তিতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু শিক্ষা-গবেষণা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অনতিবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ সকল পর্ষদের নির্বাচন সম্পন্ন করার জোর দাবি জানানো হয়। নির্বাচন না হলে চলমান প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে উদ্ভূত যে কোন সংকটময় পরিস্থিতির দায় উপাচার্যকেই বহন করতে হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ বলেন, নির্বাচন অনেক দিন থেকে আটকে আছে। মাঝখানে আমরা শিক্ষক সমিতির নির্বাচন করলাম। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অবশ্যই সেসব নির্বাচনগুলো হওয়া উচিত। কিন্তু হলো না কেন সেটাই একটা ব্যাপার ।
আরও পড়ুন: চবিতে ১২ ফুট লম্বা রাজ গোখরা উদ্ধার
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘করোনা প্রকোপের মধ্যে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয়ে গেল, অন্যান্য নির্বাচনগুলো হতে বাধা নেই। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এগুলো দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখা হয়। তবে খুবই দ্রুত এসব নির্বাচন হয়ে যাওয়া উচিত। করোনার প্রকোপ এখন অনেকটা কমে আসছে ফলে নির্বাচনের আয়োজন করা কোন সমস্যা না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্ঠা করলেও তারা কল রিসিভ করেননি।