শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়লে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তারা বলছেন, করোনার অজুহাতে বারবার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে রাখার কারণে শিক্ষা কার্যক্রমে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফের ছুটি বাড়লে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার এক দফা দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) ‘অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের সমন্বয়ক ও আহ্বায়ক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীরাও বিপাকে রয়েছেন। এভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলতে পারে না। শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রাখার কোনো যুক্তি নেই।
আরও পড়ুন: বারবার ছুটি বৃদ্ধি, পড়াশোনায় অনীহা বাড়ছে
মশিউর বলেন, গত ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে গ্রামাঞ্চলের লাখ লাখ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। হতাশায় দেশে শতাধিক শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত লাখ লাখ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়ে মানসিক সমস্যায় ভুগছে। অন্যদিকে অটোপাশের কারণে গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে ভর্তিচ্ছুরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘‘পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর নানাবিধ সমস্যার অবসান ঘটতে যাচ্ছিলো। ফাইনাল পরীক্ষা, ল্যাব পরীক্ষাসহ ১৮ মাসের জমে থাকা কার্যক্রম ফের চালু হতে শুরু করেছে। এমতাবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফের বন্ধ ঘোষণা করে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা হচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে ইতোমধ্যেই করোনার উদ্ভুত পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’’
এর আগে, দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সর্বশেষ গত ২১ জানুয়ারি থেকে ১৪ দিনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ছুটি! ছুটি! ছুটি!
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আর না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মশিউর বলেন, দেশের হাট বাজার, কলকারখানা, বানিজ্যমেলা, অফিস আদালত যেভাবে প্রয়োজনের তাগিদে স্বাভাবিকভাবে চালু রাখা হয়েছে তেমনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখতে হবে।
এদিকে, দেশে করোনা সংক্রমন নিয়ন্ত্রণে বাইরে থাকায় আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পর আরও দুই সপ্তাহ শিক্ষাপতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। আজ বুধবার দুপুরে তিনি জানিয়েছেন, ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি শীঘ্রই জানিয়ে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: চলতি বছরের সরকারি ছুটি ২২ দিন, ৬ দিন শুক্র-শনি
মশিউর বলেন, ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়লে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে থাকবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর গত ২১ জানুয়ারি ১৪ দিনের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্তও শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছিল। এ ধাপের ছুটি শেষে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে হবে। এছাড়া যদি নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বৃদ্ধি করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।