ডাইনিং বন্ধ, জিয়া হলের ফারুক এখন ফুটপাতের বিক্রেতা

ফুটপাতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করছেন মো. ফারুক
ফুটপাতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করছেন মো. ফারুক  © সংগৃহীত

প্রায় দুই যুগ ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের (জিয়া হল) বন্ধন মেসে (ডাইনিং) কাজ করছেন মো. ফারুক নামের এক কর্মচারী। ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়লে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হলও। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর গত অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়া হলেও চালু হয়নি জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের একমাত্র এই ডাইনিংটি।

জীবন-জীবিকার তাগিদে সেই ডাইনিংয়ে কাজ করা ফারুক এখন পুরান ঢাকার ফুটপাতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করছেন। অন্যদিকে, ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের একমাত্র ডাইনিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাবার নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। এখন ক্যান্টিন থেকে চড়া মূল্যের কম মানসম্মত খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভও সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন: জিয়া হলে দীর্ঘদিন ধরে মেস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

সম্প্রতি জিয়া হলের একটি ফেসবুক গ্রুপে হাবিবুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী ফারুককে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। ফুটপাতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করার দুটি ছবি দিয়ে সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ফারুক ভাই বন্ধন মেসে কাজ করেছেন ২২ বছর। এখন মেস বন্ধ। কাজ নাই। নাজিমউদ্দীন রোড এর ফুটপাতে দোকান নিয়ে বসেন।

আরও পড়ুন: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ ব্যক্তি

“মাস্ক পরা ছিলাম। তারপরেও চিনে ফেলেছেন। দূর থেকে ডাক দিয়েছেন। আইন বিভাগ অনেক দূরে হওয়ায় আমি মেসে খুব অল্প কয়েকদিন খেয়েছি। তারপরেও আমাদের প্রতি তাদের আন্তরিকতার কোনো কমতি নাই। কিন্তু এর উল্টা হচ্ছে প্রভোস্ট আর হাউজ টিউটর। ক্যান্টিনের খাবারের উপরে কন্ট্রোল নাই। দোকানে রান্না করতে দিবে না। আবার একটা মেস চালু রাখার মতো প্রশাসনিক দক্ষতাও নাই। হলে এদের প্রয়োজনীয়তা কী বুঝলাম না।”

তাই এই স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে অনেকেই ডাইনিং বন্ধ রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এতে তারা হলে প্রশাসনের অদক্ষতার কথা তুলে ধরছেন।

কাজী ফরহাদ নামে একজন লিখেছেন, ফারুকের এই অবস্থা দেখে খুব খারাপ লাগছে। আমাদের সময়ে সে অনেক ছোট ছিল। সব সময় খাবার টেবিলে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করতো। কিছু লাগবে কি না জানতে চাইতো। কারো কাছে ফারুকের নাম্বার থাকলে যেন গ্রুপে দেয়। আমরা সবাই মিলে কিছু সহায়তা করলে তার উপকার হবে। এটা আমাদের মানবিক দায়িত্ব।

আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁসে জড়িত রূপাকে আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি

মেস চালু করতে প্রশাসন কি পদক্ষেপ নিচ্ছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার হলে চারটি ব্লক ভাগ করা আছে। আমার হাউস টিউটর যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে ব্লকগুলোর প্রত্যেকটি রুমে গিয়ে ছাত্রদের সাথে কথা বলে বন্ধন মেসের জন্য সদস্য আহবান করছি।


সর্বশেষ সংবাদ