নিয়োগ নীতির সংশোধনের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মৎস্য অধিদপ্তরের নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা-২০২০ সংশোধন এবং বিপিএসসির চলমান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মৎস্য স্নাতকদের অন্তর্ভুক্তি ও ন্যায্য অধিকারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ফিশারিজ এন্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ নিয়োগ বিধির সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয়বার ভর্তির সুযোগের পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী, আলোচনায় বসার আহ্বান
ফিসারিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তামিম দারী বলেন, ‘গত ২৩ ডিসেম্বর মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফিসারিজের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয় সেখানে প্রাণীবিদ্যা, প্রথম শ্রেনী ও তার সমমান সিজিপিএধারী এবং চারবছর মেয়াদী মৎস্য ডিপ্লোমাধারী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। সেখানে মৎস্য সেক্টর হওয়ার পরও মৎস্য গ্র্যাজুয়েটদের আবেদন করার সুযোগ নেই। আমরা এই প্রহসনমূলক নীতিমালার তীব্র নিন্দা জানাই।’
ফিসারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানিয়া ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে যে কয়টি সেক্টর আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রেখেছে তার মধ্যে ফিসারিজ অন্যতম। প্রতিবছর মৎস্য বিভাগ আমাদের জিডিপিতে ৩.৫ শতাংশ অবদান রাখে এবং দেশের আমিষের ৬০ শতাংশ পূরণে কাজ করছে।’
আরও পড়ুন: এখনই বন্ধ হচ্ছে না রাবি, চলমান থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা
তিনি আরও বলেন,‘বাংলাদেশের ১৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিসারিজ বিভাগটি থাকার কারণে প্রতিবছর প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থীরা গ্রেজুয়েট হয়ে বের হয়। দেশে চাকরির বাজার সীমিত থাকার কারণে আমি একজন ফিসারিজ গ্রজুয়েট হিসেবে আমার ও আমার শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসাবে নবম গ্রেড থেকে ফিসারিজ গ্র্যাজুয়েটদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ করে দেয়ার দাবি জানাই। এটা ফিসারিজ গ্যাজুয়েটদের অধিকার। তাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্যে আমি মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনের সমাপনী বক্তব্যে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জি এম রাশেদ বলেন, ‘সম্প্রতি পিএসসি থেকে দশম গ্রেডের একটি সার্ক্যুলার দেয়া হয়েছে, যেখানে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে আবেদন করার সুযোগ দিলেও আমাদের জন্য সেই সুযোগ নেই। আমরা এই প্রহসনমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে মৎস্য অধিদপ্তরের ডিডি এডমিন বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছি। পরবর্তীতে সচিবের কাছেও স্মারকলিপি দেয়া হয়। তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু গত ৩৭ তম বিসিএসেও এমন প্রহসনমূলক সার্কুলার দেয়া হয়েছিলো, প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশের ফিসারিজ বিভাগ মানববন্ধন করেছিলো। তখনও প্রসাশন থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিলো কিন্তু দাবি মেনে নেয়া হয়নি।’
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
ঐ শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘আমরা আজ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা একযোগে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছি। যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হয় এবং বিজ্ঞপ্তি সংশোধন না করা হয় তাহলে আমরা পরবর্তীতে আমরণ অনশনে বসতে বাধ্য হবো।’
উল্লেখ্য, মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিপিএসসির চলমান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে প্রহসন ও বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেন। সেই সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মৎস্য অধিদপ্তরের নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা-২০২০ সংশোধনের দাবিসহ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মৎস্য স্নাতকদের অন্তর্ভুক্তির জন্যে দাবি জানান তারা। এতে নায্য দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি পালনের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।