অ্যাকাডেমিক কাজের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নিয়ে রিসোর্টে ঢাবি শিক্ষক

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাবির ২০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাবির ২০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে  © ছবি : সংগৃহীত

অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামে অংশ নেয়ার কথা বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাবির ২০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শিক্ষকরা সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) উত্তরার দিয়াবাড়িতে অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামে যাওয়ার কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি মিনিবাস ব্যবহারের অনুমতি নেন। তবে কোনো ধরনের অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রামে অংশ না নিয়েই তারা সাভারের একটি রিসোর্টে ঘুরতে যান বলে জানা গেছে।

অভিযোগ ওঠা শিক্ষকরা হলেন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম সানা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু হোসেন মুহাম্মদ আহসান, অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও প্রভাষক মেহেদি হাসানসহ আরো কয়েকজন।

আরও পড়ুন: গুচ্ছে কোন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কবে?

এদিকে নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ ছাড়া অন্য কাজে ব্যবহারের প্রয়োজন হলে কী কারণে ব্যবহার করা হবে, কত সময় ব্যবহার করা হবে, গাড়ির গন্তব্য কোথায় হবে- এসব বিষয় একটি রিক্যুইজিশন স্লিপে লিখে অনুমোদন নিতে হয়।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাসের জন্য ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান আবেদন করেন। সেখানে অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম উল্লেখ করে বাস উত্তরা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কথা লিপিবদ্ধ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘দিয়াবাড়িতে আমাদের একটি অ্যাকাডেমিক ওয়ার্কশপ ছিল। প্রথমে সেখানে গিয়েছি। পরে সাভারের বিরুলিয়া রিসোর্টে যাই। সেখান থেকে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ফিরে আসি।’

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল থেকে বাসটি যাত্রা করে। বাসটি সরাসরি সাভারের বিরুলিয়ায় অবস্থিত ‘কৃষিবিদ ওয়েস্ট ওয়ে’ রিসোর্টে পৌঁছায়। বাসটি দিয়াবাড়িতে যায়নি। রাতে সাভার থেকেই বাসটি শিক্ষকদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ বলেন, ‘আমাকে কেন? আইন বিভাগের নকীব নসরুল্লাহ স্যার এটির আয়োজন করেছেন। উনাকে ফোন দেন।’

অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম সানার সাথে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

তবে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, ‘শিক্ষাসংক্রান্ত কাজে তারা উত্তরায় যাবে জানতাম। শিক্ষাসংক্রান্ত কাজের কথা বলে যদি তারা অন্য কোথাও যায়, তাহলে কী আর করা যায়।

আরও পড়ুন: এসডিজি অর্জনে সহায়তায় চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পেলেন খুবি ছাত্রী

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামানকে বিষয়টি অবগত করালে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

রিসোর্টে আরো গিয়েছিলেন, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের প্রভাষক কাজী মো. জামশেদ, একরামুল হুদা, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করীম, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স সিস্টেম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হাসান, ক্রিমোনোলজি বিভাগের প্রভাষক এ বি এম নাজমুস সাকিব, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অমিয় সৃজন সাম্য ও পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের প্রভাষক জাকিউল আলম। বাকি শিক্ষকদের নাম জানা যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ