হামলার ছবি তোলায় সাংবাদিককে ছাত্রলীগের মারধর

হামলার গুরুতর আহত আবিদ হাসান রাসেল
হামলার গুরুতর আহত আবিদ হাসান রাসেল  © টিডিসি ফটো

হামলা ও মারধরের ছবি তোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বাংলা ট্রিবিউনেরর বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার আবিদ হাসান রাসেলকে মারধর করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে টিএসসিতে একটি সংগঠনের মোদির বাংলাদেশ আগমনবিরোধী অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

এর আগে এদিন বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সঞ্জীব চত্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের জনগণ ব্যানারে জেয়াফত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে একটি সংগঠন। এ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ এসে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়। সেখানে সংবাদ সংগ্রহরত ঢাকা ট্রিবিউনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আবিদ হাসান রাসেলকে মারধর করা হয়।

আবিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। রাসেল বলেন, টিএসসিতে একটি সংগঠনের একটি কর্মসূচি ছিল। সেখানে ছাত্রলীগের হঠাৎ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে তাদেরকে মারধরে করে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। সেখানে আমি ছবি তুলতে গেলে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তারা তা না শুনে আমাকে মারধর করতে থাকে। আমি আমার প্রেস কার্ড বের করে দেখালে তারা আমার থেকে তা ছিনিয়ে নেয়। তারা আমার মুঠোফোনটিও নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ‘জেয়াফত’ নামে একটি কর্মসূচি দেয় ‘বাংলাদেশের জনগণ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। কর্মসূচি শুরুর আগে উপস্থিত আন্দোলনকারীদের মারধর করে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এই ঘটনার ভিডিও ধারণের সময় ‘সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও’ রাসেলের ওপরে হামলা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলার নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি উৎপল দাস। এছাড়া এ সময় সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, বঙ্গবন্ধু হলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক তানসেন শেখ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ছাত্রলীগ কর্মী নুর আল আমিন ও শাকিল রেজা, বিজয় একাত্তর হলের দপ্তর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তামিমকে দেখা গেছে।

হামলায় আহত সাংবাদিক আবিদ হাসান রাসেলকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে এ হামলায় প্রত্যেক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান তুষার বলেন, টিএসসিতে একটি সংগঠনের সরকারবিরোধী কর্মসূচির কথাটি শুনেছি। তবে সেখানে কোন সাংবাদিককে মারধরের খবর শুনিনি।


সর্বশেষ সংবাদ