অর্থাভাবে আছেন জাবির ৩শ' দোকান মালিক ও কর্মচারীর

  © ফাইল ফটো

নভেল করোনাভাইরাস মহামারির কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায়। আবাসিক হলগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে ক্যাম্পাসের সব দোকানপাট বন্ধ রাখতে বাধ্য হন মালিক-কর্মচারীরা।

দীর্ঘ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন জাবির অন্তত তিনশ' দোকান মালিক ও কর্মচারী। অর্থকষ্টে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। এদের মধ্যে এখন অনেকে চালাচ্ছেন রিকশা, কেউ ভ্রাম্যমাণ চা-মুড়ির দোকান দিয়ে কোনোভাবে দিন কাটাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কলা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর ও বাইরে তালিকাভুক্ত মোট ২২২টি দোকান রয়েছে। কিছু দোকান ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকলেও অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেট, প্রান্তিক গেট ও বিশমাইল গেটে অবস্থিত।

জানা গেছে, এ দীর্ঘ ছুটিতে এসব দোকানপাট বন্ধ থাকলেও অধিকাংশ কর্মচারী কোনো বেতন পাননি। অল্প কিছু দোকান মালিক তাদের কর্মচারীদের অর্ধেক বা আংশিক বেতন দিয়েছেন। তবে সম্প্রতি দোকান চালু হলেও বেচাকেনা না থাকায় দোকান মালিকরাও অর্থ সংকটে পড়েছেন।

এদিকে বটতলা ও গেরুয়া এলাকায় ছেলেদের হলগুলোর নিয়ন্ত্রণে আরও ৭০টির বেশি খাবারের দোকান রয়েছে। মালিক-কর্মচারীদের আয়ের উৎস এসব দোকান থেকেই। ছয় মাস ধরে এগুলো বন্ধ রয়েছে। বটতলার একাধিক দোকান মালিক বলেন, আমাদের সবার অবস্থাই খুব খারাপ। অনেকে তাদের জমানো টাকা খরচ করে খাচ্ছেন।

দোকানদার কালাম মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ও মানবিকী অনুষদ সংলগ্ন মুরাদ চত্বরে আমার টং দোকান ছিল। কিন্তু এখন আমি ছয় মাস ধরে বেকার। আমার অন্য কোনো আয়-রোজগারের পথও নেই। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ের সংসার থাকলেও সম্প্রতি তার ঘরে নতুন আরেকজন সন্তান এসেছে বলে জানায় সে। একদিকে নবজাতক, অন্যদিকে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা। এমন অবস্থায় কালাম এখন দিশেহারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার সালামের খাবারের দোকানের কর্মচারী মো. সিরাজ। থাকতেন সালাম মিয়ার বাসাতেই। দোকান বন্ধের পর তার কাছেই ছিলেন। কিন্তু সালাম মিয়ার অবস্থাও খারাপ। তাকেই চলতে হচ্ছে অন্যের ধারের ওপর। তাই সেখান থেকে সিরাজ চলে এসেছেন।

সিরাজ অসুস্থ মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে খুবই কষ্টের জীবন পার করছেন। সিরাজ বলেন, ছয় মাস ধরে বেকার। কিছুদিন অন্যদের কাছ থেকে ধারদেনা নিয়ে চলেছি। এখন আর পারছি না।


সর্বশেষ সংবাদ