রাবিতে হল খোলা রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, প্রক্টরের সঙ্গে ধস্তাধস্তি

 হল খোলা রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, প্রক্টরের সঙ্গে ধস্তাধস্তি
হল খোলা রাখার দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান, প্রক্টরের সঙ্গে ধস্তাধস্তি  © সংগৃহীত

ঈদের ছুটি উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলো এক সপ্তাহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে গত মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন। 

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষক কোয়ার্টার খোলা রেখে হল বন্ধ কেন?’, ‘আবাসিক হল বন্ধ করা চলবে না’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কি বন্ধ’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

জানা যায়, আজ সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে কর্মসূচি চালিয়ে যান। এতে ভবনের ভেতরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বেলা দেড়টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং ভবনের তালা খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়।

পরে তালা খুলে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন তিনি। মুক্ত হয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর উচ্চবাচ্য শুরু করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তবে এ ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়া হল বন্ধের সিদ্ধান্ত, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ভ্রুক্ষেপ না করা, প্রক্টরের হামলা ও হল বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকা ফ্যাসিবাদী আচরণেরই অন্তর্ভুক্ত। হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা।

অন্যদিকে প্রশাসন বলছে, শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা করতে ও তাদের সংকট নিরসনে কাজ করছে প্রশাসন। তবে প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে এ ধরনের কর্মসূচি সে কাজকে ব্যাহত করে।

কর্মসূচি পালনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির বিষয়ে রাবির প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকের পৃথক পৃথক সমস্যা থাকে। সে সংকট নিরসনে হল প্রাধ্যক্ষরা হলে থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি জানার চেষ্টা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একটি সভা করতে প্রশাসনিক ভবনের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু একদল আন্দোলনকারী ভবনে তালা দিয়ে আমাদের কাজ ব্যাহত করেছে। এ সময় আমি তালা খুলতে অনুরোধ করলেও তারা যখন খোলেনি, তখন তাদের কাছে থেকে চাবি ছিনিয়ে নিতে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়েছে।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, তারা আন্দোলনের একটা পর্যায়ে এসে তালা লাগাতে বাধ্য হয়েছেন। উপাচার্য চলে গেছেন কোনো কথা না বলে। এ কারণে তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারের আচরণ ফ্যাসিস্টের মতো।

এর আগে সকালে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর বাইরে আর অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আবাসিক হল বন্ধই থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ