জুলাইয়ে ছাত্রদের উপর হামলাকারী কর্মকর্তা গ্রেফতার, ব্যবস্থা নেয়নি ঢাবি প্রশাসন

মোহাম্মদ তৈয়ব আলী
মোহাম্মদ তৈয়ব আলী  © ফাইল ফটো

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা ও আহত করার অভিযোগ গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট প্রমোশন এন্ড সাপোর্ট ইউনিট অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট কন্ট্রোলার ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ তৈয়ব আলী (৪৩)।

গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর আদালতে তাকে উত্তোলন করে 'হামলায় যুক্ত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায়' জেলে পাঠানোর সুপারিশ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

আজ বুধবার (১ জানুয়ারি) তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, তৈয়ব আলীর জামিন হয়নি। সেদিনই তাকে জেলে পাঠায় আদালত।  

জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের উপর সরাসরি হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে তৈয়ব আলীকে জেলে পাঠালেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের এক কর্মকর্তা জানান, স্বাভাবিকভাবে কোনো কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী ফৌজদারী অপরাধে জড়িত হলে তাকে শোকজ করা হয় কিংবা সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু তৈয়ব আলীকে এখনো বহাল তবিয়তে রাখা রয়েছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের বড় বড় পদে এখনো আওয়ামীলীগ পন্থীরা বসে আছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদীসহ ছাত্রজনতা এবং সকল শ্রেণীর জনসাধারণ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গত ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা মহানগর নয়া পল্টন, শান্তিনগর, বিজয় নগর, পুরান পল্টন, বায়তুল মোকারম উত্তর গেট, সেগুন বাগিচা, মৎস্য ভবন মোড়, কাকরাইলসহ ঘটনাস্থল-জাতীয় পার্টির প্রধান কার্যালয়ের উল্টো পার্শ্বে, হিসাব ভবনের পিছনে রাস্তায় লোহার গেইটের অনুমান ৫০ গজ দুরে স্লোগান দিতে থাকিলে এজাহারনামীয় ১নং থেকে ৬২নং আসামীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্ররোচনা ও হুকুমে গ্রেফতারকৃত সন্ধিগ্ধ আসামী (তৈয়ব আলী) -সহ অজ্ঞাতনামা আসামিগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকিয়া বে-আইনী জনতাবদ্ধে একই উদ্দেশ্য সাধনকল্পে দা, লাঠি, দেশী ও বিদেশী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপরে লাঠিপেটা ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করাকালে বাদী আঘাত প্রাপ্ত হইয়া মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন বাদীর দলীয় নেতাকর্মীরা ও ছাত্রজনতা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতারকৃত সন্দিগ্ধ আসামীকে গুপ্তচর এর দেওয়া তথ্যমতে অত্র থানাধীন বেইলী রোড হতে ২৯ ডিসেম্বর সকাল ০৯.৩০টায় গ্রেফতার করা হয়।... উক্ত মামলার প্রাথমিক তদন্তে আসামীর বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাইতেছে এবং মামলা সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্যাদি সংগ্রহ ও তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে। 

তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামীকে জেলহাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

ঢাবির প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, আমি আজকে বিষয়টি জেনেছি। তবে ঘটনাটা অন্যরকম শুনেছি। পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হওয়ার জন্য আমি রেজিস্ট্রার এবং প্রক্টর মহোদয়কে খোঁজ নেওয়ার জন্য বলেছি। তারা খোঁজ নিবে। প্রয়োজন হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলবে। তারপর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া দরকার হলে সেটা প্রশাসন অবশ্যই নিবে।


সর্বশেষ সংবাদ