ঢাবিতে হাসিনার আগের ব্যঙ্গ গ্রাফিতিই থাকতে হবে, দাবি সাইয়েদ আবদুল্লাহর

সাইয়েদ আবদুল্লাহ ও ডানে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি
সাইয়েদ আবদুল্লাহ ও ডানে শেখ হাসিনার গ্রাফিতি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেট্রোরেলের পিলার থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। গভীর রাতে গ্রাফিতির ওপরের অংশ মুছে ফেলার পর ঢাবি শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। পরে তারা মুছে ফেলা অংশে নতুন করে গ্রাফিতি এঁকে দিয়েছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাবির আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক সাইয়েদ আবদুল্লাহ।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ফেসবুকে নিজের আইডিতে এক পোস্টে এ বিষয়ে তিনি প্রতিক্রিয়া জানান।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেট্রোরেলের পিলার থেকে এই গ্রাফিতিটা গতকাল গভীর রাতে মুছে ফেলা হচ্ছিল। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গভীর রাতেই অনলাইনে সরব হই আমরা কয়েকজন। ওইটা মোছা হয়ে যাওয়ায় পরবর্তীতে কয়েকজন হাসিনার অন্য একটা ক্যারিকেচার আঁকে।’

‘কিন্তু কথাটা হলো, ভিন্নটা কেন করা হবে? আগেরটাই লাগবে, হুবহু আগেরটাই এবং ওইটার ওপরও কালি মেখে, রক্তের মতো লাল রং দিয়ে ডা-ই-নি টাইপ ভাইভই রাখতে হবে আর ওইটাতে যেভাবে জুতার মালা দেওয়া ছিল, ওই একইভাবে রাখতে হবে। মানে হুবহু রেস্টোর করতে হবে। ওইটার ভেতর যে মেসেজ ছিল, নতুনটার ভেতর সেটা নাই। গণঅভ্যুত্থানে দেশের জনগণ হাসিনাকে যেভাবে প্রত্যাখ্যান করে উৎখাত করেছিল, সেটার অটো রিপ্রেজেনটেশন ছিল ওইটাতে।’

‘আর হুটহাট করে যারা এইটা মোছার প্ল্যান করেছিল বা যাদের মাথা দিয়ে এই প্ল্যান বের হয়েছিল, তাদের প্রত্যেককে আইডেন্টিফাই করে কঠোর জবাবদিহিতার ভেতর নিয়ে আসা উচিত।’

আরও পড়ুন : ‘আ.লীগ নেতারা পালিয়েছে, বিএনপির দুর্নীতিবাজরা পালানোর সুযোগও পাবে না’

‘এই নির্দেশ এসেছিল কোন সংস্থা থেকে? এবং ক্যাম্পাসের ভেতর বড় টেকনিক্যাল ভেহিকেল নিয়ে এসে এই কাজ করা হয়েছে, তার মানে হলো, এইটার পারমিশনের সাথে ভিসি বা প্রক্টরের এফিলিয়েশন থাকার কথা। অর্থাৎ কোনো এজেন্সি থেকে যদি বলা হয় এবং প্রক্টর বা ভিসি যারা এইটা প্রতিরোধ করেননি, তাদের প্রত্যেককে কঠোর জবাবদিহির ভেতর নিয়ে আসতে হবে। স্বৈরাচারী হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করার চিহ্নগুলো মুছে দিয়ে এরা কী করতে চায়, সেটা বুঝবার দরকার আছে।’

‘এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ওই জুতারমালা গলায় দেওয়া প্রত্যাখ্যাত হাসিনার ডা-ই-নি রূপ ফুটিয়ে তোলার দরকার। যতবার মুছতে চাইবে, ততবার আরও বেশি করে সবজায়গায় ফুটিয়ে তুলতে হবে।’

‘বিভিন্ন জায়গা থেকে এরা প্রথমে গ্রাফিতি মুছতে চাইবে, তারপর দেশের মানুষের মন থেকেই ওই হয়েনাদের অপকর্মের ফিরিস্তি মুছে দিতে চাইবে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। দেশের জনগণের উচিত সেটা কোন অবস্থাতেই না হতে দেওয়া!’

এর আগে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ব্যঙ্গাত্মক গ্রাফিতি ক্রেন নিয়ে মুছতে আসেন সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মী। হাসিনার গ্রাফিতি মুছে ফেলা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা এসে বাধা দিলে তারা এটি বন্ধ করতে বাধ্য হন।

শিক্ষার্থীরা এটি দেখে প্রক্টরকে কল করলে তিনি এসে জানান যে তাকে গোয়েন্দা সংস্থা কল করে বলেছে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি মুছে দেওয়ার জন্য। পরে প্রক্টর এস্টেট অফিসকে জানালে তারা সিটি করপোরেশন ও মেট্রো কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এটি মুছে ফেলার উদ্যোগ নেন। তবে তা শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ