প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ রাবি শিক্ষকের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫১ PM , আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫১ PM
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রচারিত ‘নম্বর জালিয়াতি করে শিক্ষক হওয়ার অভিযোগ রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুর নুসরাত সুলতানা।
আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) এক প্রতিবাদলিপিতে তিনি বলেছেন, আমি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের নিয়মিত ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও প্রকাশিত নিউজে আমাকে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের দূরশিক্ষণের ছাত্রী বলা হয়েছে। যা এক প্রকার অপপ্রচার। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: নম্বর জালিয়াতি করে শিক্ষক হওয়ার অভিযোগ রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে
তিনি বলেন, দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস নামক একটি সংবাদ মাধ্যম প্রকাশ করেছে যে, আমি নুর নুসরাত সুলতানা ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন-এর দূরশিক্ষণের ছাত্রী। কিন্তু আমি আমার পাসপোর্ট, ভিসাসহ বিভিন্ন নথি অসংখ্যবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নিকট প্রমাণস্বরূপ জমা দিয়েছি যে, আমি দূরশিক্ষণের ছাত্রী নই। বরং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের সশরীরে নিয়মিত অন ক্যাম্পাসের ছাত্রী।
তিনি আরও বলেন, জনৈক কোনো এক ব্যক্তি আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেছে, শুনেছি যার শুনানি এখন পর্যন্ত হয় নাই। সুতরাং আমি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের নিয়মিত ছাত্রী হওয়া সত্ত্বেও আমার সম্পর্কে এই ধরনের অপপ্রচারের নিন্দা জানাচ্ছি।
মার্কস জালিয়াতির বিষয়ে বলেন, বিদেশি ডিগ্রির ৬০% মার্কসকে প্রথম শ্রেণি দেখিয়ে অনেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১৯৭৩-এর অ্যাক্টে গঠিত ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। ৬০% মার্কস দেখিয়ে রাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের শাহরিয়ার কবির স্যার নিয়োগ পান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তারেক নূর স্যারও এভাবেই নিয়োগ পান।
সহকারী অধ্যাপক নুর নুসরাত বলেন, নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে মাস্টার্সকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে এমফিলের পদমর্যাদা দেওয়া হয়। বিদেশি ডিগ্রির গ্রেডিংয়ের উপর বিভিন্ন ক্যাটাগরি রয়েছে। নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে মাস্টার্সে ৬০% মার্কসকে বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণি ধরা হয় এবং এভাবেই প্রথম শ্রেণি ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। কারণ এটি রাবির একটি কনভেনশন।
যারা এই বিষয়ে জানতে চান, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ এর অ্যাক্টটি পড়লে বুঝতে পারবেন। বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন, সুতরাং আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত আমি এই বিষয়ে আর মন্তব্য করতে চাই না।
প্রতিবেদকের বক্তব্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের নিয়োগ দুর্নীতির প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনের ২১নং পর্যবেক্ষণে ইউজিসির তদন্ত কমিটি যা উল্লেখ করেছে তা নিয়েই নিউজ করা হয়েছে। যা প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। এখানে প্রতিবেদকের মনগড়া কোনো মন্তব্য তুলে ধরা হয়নি।
প্রতিবাদলিপিতে নুর নুসরাত সুলতানা উল্লেখ করেছেন, তিনি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অন ক্লাসের মিয়মিত ছাত্রী ছিলেন এবং তা প্রমাণ করতে তাঁর পাসপোর্ট, ভিসাসহ বিভিন্ন নথি অসংখ্যবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নিকট জমা দিয়েছেন।
কিন্তু আইন বিভাগটির নিয়োগ দুর্নীতির প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদনের ২১নং পর্যবেক্ষণে ইউজিসির তদন্ত কমিটি উল্লেখ করেছে, তিনি ব্রিটেনে অবস্থান করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন না অনলাইন/ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছেন এ বিষয়টি সুস্পষ্টকরণের নিমিত্তে তাঁর পাসপোর্টের ফটোকপি, ভর্তির অফার লেটার, এনরোলমেন্ট লেটার, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সনদ, ইউজিসি কর্তৃক ডিগ্রির সমতাবিধান সার্টিফিকেট ও সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্তের জন্য নূর নুসরাত সুলতানাকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে পত্র দেওয়া হলে তারা কোনো জবাব দেননি। এই বিষয়ে তাগিদপত্র দেওয়া সত্ত্বেও রেজিস্ট্রারের নির্লিপ্ততা সন্দেহকে আরও দৃঢ় করেছে।
ইউজিসি আরো বলছে, জনাব নূর নুসরাত সুলাতানার ব্রেক অব স্ট্যাডি রয়েছে। দূরশিক্ষণের মাধ্যমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি যদি সম্পন্ন করে থাকেন এবং সমতা বিধান সার্টিফিকেট না পেয়ে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য বলে ধরে নেয়া যায়।’
প্রতিবাদলিপিতে এই শিক্ষক আরো উল্লেখ করেছেন, নর্থ আমেরিকা ও ইউরোপে মাস্টার্সে ৬০% মার্কসকে বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণি ধরা হয় এবং এভাবেই প্রথম শ্রেণি ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন। কারণ এটি রাবির একটি কনভেনশন।
কিন্তু ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে বলেছে, নুর নুসরাত সুলতানা ২০১৩ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিটেন থেকে স্নাতক (দ্বিতীয় শ্রেণি) এবং ২০১৬ সালে বিপিপি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিটেন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। বিপিপি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরে ৬৩% নম্বর পেয়েছে, যা বিপিপি বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন এ উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণি হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ৬০% to less than ৬৫% প্রাপ্ত নম্বরকে সিজিপিএ ৩.০০ বা B regular হিসেবে নির্ধারণ করেছে। সে কারণে জনাব নুর নুসরাত সুলতানা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোনোটিতেই সিজিপিএ ৩.২৫ পায়নি।