ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার বাদ দিয়ে হিজড়া কোটা বহালের দাবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১১ AM , আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৯ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাদ দিয়ে শুধু হিজড়া কোটা বহাল করার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। ট্রান্সজেন্ডার ধারণাকে ‘একটি বিকৃত মতবাদ’ হিসেবে উপস্থাপন ও হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ‘স্বতন্ত্র সম্প্রদায়’ আখ্যায়িত করে এ দাবি জানিয়েছে তারা। এ দাবি জানিয়ে সম্প্রতি উপাচার্যকে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলছেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে "হিজড়া/ট্রান্সজেন্ডার কোটা" চালু করা হয়েছে। যেখানে “ট্রান্সজেন্ডার” শব্দ নিয়ে আমাদের গুরুতর আপত্তি রয়েছে এবং আমরা মনে করি এটি বাংলাদেশের সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক।
তারা আরও বলেন, ট্রান্সজেন্ডার ধারণা একটি বিকৃত মতবাদ হিসেবে ব্যাপকভাবে সমালোচিত। ট্রান্সজেন্ডার দাবি অনুযায়ী জন্মগত দেহ যা-ই হোক না কেন, নিজেকে কেউ নারী বা পুরুষ দাবি করলে তাকে নারী বা পুরুষ বলেই মেনে নিতে হবে। কেউ চাইলে ইচ্ছেমতো ঔষধ আর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বদলে নেবে নিজের দেহকে। আর কেউ যদি অস্ত্রোপচার না করেই নিজেকে বিপরীত লিঙ্গের বলে দাবি করে, তাও মেনে নিতে হবে। যা মূলত মানব সমাজের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে।
তারা দাবি করেন, ট্রান্সজেন্ডার ধারণা কিছু বিকৃতমনা মানুষের বিকৃত অভিরুচি পূরণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় তাদের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণের পরিবর্তে বিশেষ সুবিধা প্রদান করাকে কোন সুস্থ সমাজের কাজ বলে মনে করি না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে হিজড়া জনগোষ্ঠী একটি স্বতন্ত্র সম্প্রদায়। হিজড়া সম্প্রদায়ের সমস্যা, চ্যালেঞ্জ এবং সামাজিক অবস্থান সম্পূর্ণভাবে ট্রান্সজেন্ডার ধারণা থেকে পৃথক। এই সম্প্রদায়ের উন্নয়নে আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে এবং তাদের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি। আমরা জোরালোভাবে প্রস্তাব করছি যে, 'ট্রান্সজেন্ডার' শব্দ বাদ দিয়ে শুধু 'হিজড়া কোটা' বহাল রাখা হোক এবং যারা দেশের সমাজ,সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিরুদ্ধ ট্রান্সজেন্ডার কোটায় ভর্তি হয়েছে যাদের ভর্তি বাতিল করা হোক। আমাদের প্রস্তাবনা হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করা এবং তাদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা, যাতে তারা সমাজের মূলধারায় আরও শক্তভাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। একইসাথে হিজড়ার নাম দিয়ে কোন বিকৃতমনা মানুষ যেন সুবিধাভোগ করতে না পারে সেক্ষেত্রে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি কামনা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সঠিকভাবে হিজড়া জনগোষ্ঠিকে শনাক্ত করতে তিন ধাপের একটি প্রস্তাব স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রস্তাবনা অনুসারে, প্রত্যেক হিজড়া আবেদনকারী স্থানীয় হিজড়া গুরুর মাধ্যমে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করবেন। তার ভিত্তিতে সমাজসেবা অফিস হিজড়া শনাক্তকরণের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। সর্বশেষ যাচাইয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট মেডিকেল বোর্ড হিজড়া আবেদনকারীর পরিচয় নিশ্চিত করবে।