সেদিন লাঠি হাতে থাকা শিক্ষার্থীরা ছিল অপরিচিত: ঢাবি ভিসি
ভিসি চত্ত্বরে ছাত্রলীগের হামলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫০ PM , আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:১৫ PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে হল দুটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল গত ১৫ জুলাই (সোমবার) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং প্রশাসনের ভূমিকার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন।
প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, সেদিন কোটা সংস্কারপন্থীদের রাজু ভাস্কর্যে প্রোগ্রাম ছিল দুপুর ১২টায়, ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ছিল ৩টার সময়। আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রস্তুত ছিল।
তিনি বলেন, এখন শিক্ষার্থীদের একটা অংশ বিশেষ করে কোটা সংস্কারপন্থীদের একটা অংশ ৩টার কাছাকাছি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া খ্যাত বঙ্গবন্ধু হল, কবি জসিমউদ্দিন হল, বিজয় একাত্তর হলের এদিকে আসে। দুপুরের সময়ে তখন প্রভোস্টরা হলে ছিল না। তারা এদিকে আসবে প্রক্টরিয়াল টিমের জানা ছিল না।
বিষয়টি জানার সাথে সাথে আমি প্রভোস্টদের টেলিফোন করেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রক্টরিয়াল টিমকে বলেছি সেখানে যাওয়ার জন্য। কিন্তু ততক্ষণে মারামারিটা শুরু হয়ে যায়।
ভিসি চত্ত্বরে সেদিন সকলের হাতে লাঠি ছিল উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, মারামারির শুরু হওয়ার সময়ে আমরা দেখলাম সকলের হাতে লাঠি। এ অবস্থায় প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়ে পৌছাঁতে পারে নাই। প্রভোস্টরাও বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়ে গেছে। প্রভোস্টরাও সেখানে পৌঁছাতে পারে নাই।
লাঠি হাতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অপিরিচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সেখানে গিয়ে বস্তুত অর্থে আমরা গিয়ে মারামারি থামাবো..... সেখানে শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের হাতে লাঠি এবং তাদের বেশিরভাগ অপরিচিত। আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের অনেক সদস্যকে তারা চিনে না। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টা (মারামারি) হয়ে গেলো।
আমাদের প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি ছিল না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম জানতো ৩টার সময় কোটা সংস্কার ছাত্রদের যে মিটিংটা ছিল রাজু ভাস্কর্যে সেটা শেষ হবে এবং পরবর্তীতে অন্যরা সমাবেশ করবে। তখন প্রক্টরিয়াল টিম শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রস্তুত ছিল।
“কিন্তু আমাদের কিংবা প্রক্টরিয়াল টিমের জানা ছিল না একটা মিছিল সেখান (বিজয় একাত্তর হলের সামনে) থেকে এদিকে (ভিসি চত্ত্বর) আসবে। তখন আমাদের প্রস্তুতিটা থাকতো। আকস্মিকভাবে ঘটনাটি ঘটেছে এবং সেই আকস্মিক ঘটনা মুহুর্তের মধ্যে মারামারি শুরু হয়ে গেছে। আমাদের যেহেতু আগে জানা ছিল না এদিকে মিছিলটি আসবে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের মবকে (বিক্ষোভ) কন্ট্রোল করা এবং সকলের হাতে লাঠি...”
তিনি বলেন, এটা থামাতে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল। এজন্য প্রভোস্টরা চেষ্টা করেছে, আমি রুম থেকে বের হয়ে দেখি সকলের হাতি লাঠি। ততক্ষণে আমি সকল প্রভোস্টর সঙ্গে কথা বলেছি, হলের হাউস টিউটরদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যদেরকে জনে জনে ফোন করে পরিস্থিত কি জানতে চেয়েছি। তখন মল চত্ত্বর থেকে মবটা চলে গেছে সামনের দিকে। এ অবস্থায় করণীয় নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যতটা দায়িত্ব পালন করার ছিল চেষ্টা করেছি।
উল্লেখ্য, গত ১৫ জুলাই দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের সামনে ও পরবর্তীতে ভিসি চত্ত্বরে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত ও রক্তাক্ত হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেক ছাত্রী ছিলেন।