চট্টগ্রামে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় আহত ১০

  © টিডিসি ফটো

সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চট্টগ্রাম শহর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ১ জন পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া প্রক্টর অফিসের সামনে ৩টি ককটেল বিস্ফোরণ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। 

সোমবার (১৫ জুলাই) বিক্ষোভের জন্য ক্যাম্পাস থেকে দুপুর আড়াইটার শাটল ট্রেনে শহরের উদ্দেশ্যে হওনা হলে ট্রেনটি আটকে দেয় নেতাকর্মীরা। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ও কাটাপাহাড় সড়কে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে শহর থেকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের উপরও হামলা চালানো হয়। তবে কারা হামলা চালিয়েছে এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এতে মোট ১০জন আহত হয়েছেন বলে জানা যায়।  

ক্যাস্পাস থেকে শহরগামী শাটল ট্রেন থেকে কোটা আন্দোলনে চবির সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিকে তুলে প্রক্টরের কাছে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় রাফির ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য প্রক্টরের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের অনুসারীদের। প্রক্টরিয়াল বডির সামনে তার উপর চড়াও হয় নেতাকর্মীরা।

কিছুক্ষণ পর আন্দোলনরত অর্ধশত নারী শিক্ষার্থী প্রক্টর অফিসে আসলে তাদেরকেও হেনস্তার অভিযোগ উঠে। দেড়ঘণ্টা পর প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা নারী শিক্ষার্থীদেরকে হলে পৌঁছিয়ে দেন। তবে এ ঘটনার পর তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানিয়েছে একাধিক শিক্ষার্থী।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দাবি, তালাত মাহমুদ রাফি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এরপরও যেহেতু সে কোটা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে, তাই তার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার নেই। এছাড়া যারা নিজেদের রাজাকার বলবে তাদের এ দেশে ঠাঁই নেই।

কোটা আন্দোলন চবির সমন্বায়ক তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমাকে জোর করে ছাত্রলীগের মিছিলে যুক্ত করে নিয়ে আসা হয়েছে। আমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হয়েছে, আপনারা সবাই দেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে ৩টায় আমাদের আন্দোলনকে বন্ধ করতে ট্রেন আটকে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গতকাল রবিবার (১৪ জুলাই) রাত ১১টায় কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে কোটা আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। 

শিক্ষার্থীরা জানান, চবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শরিফ উদ্দিন ও কনকর্ড গ্রুপের অনুসারী আবিরার শাহরিয়ার নেতৃত্বে সুমন নামের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। পরে তাকে শাহ আমানত হলে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

জানতে চাইলে শরিফ উদ্দিন গণমাধ্যমের কাছে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এক ছোটো ভাইকে মারধর করা হয়েছে শুনে তাকে বাঁচাতে গিয়েছিলাম। এটা কি অপরাধ হয়েছে আমার? 

এদিকে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে চবি প্রক্টর ড. অহিদুল আলম বলেন, আন্দোলনকারীরা যদি আদালতের রায় না মানে, তাহলে তাদের বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা আদালতে বাইরে যেতে পারবো না। আর আহত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

 

সর্বশেষ সংবাদ