জাবিতে হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৫ PM , আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৯ PM
নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আল বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৪ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে আল বেরুনী হলের সামনে মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আল-বেরুনী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। হলের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইনকে একাধিকবার অবগত করা হলেও তিনি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে তার দায়িত্ব অবহেলার কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আবাসিক শিক্ষার্থীদের।
তারা আরও বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মসহ উত্থাপিত নানা অভিযোগের পর তিনি প্রাধ্যক্ষ পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এ অবস্থায় আমরা তাকে প্রাধ্যক্ষ পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানের এক দফা দাবি জানাচ্ছি। এর পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্য কোনো শিক্ষককে দায়িত্ব প্রদান করে হলের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের দাবিও জানান তারা।
স্মারকলিপিতে প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার বিষয়াদি উল্লেখ করা হয়। তা হলো—প্রাধ্যক্ষ হলে নিয়মিত আসেন না; যার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তার বাসা ও বিভাগ থেকে স্বাক্ষর করাতে হয়। হলের পার্শ্ববর্তী লেক পরিষ্কারের বিষয়ে প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করা হলেও তিনি দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেননি। ফলে অপরিষ্কার লেকের কারণে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি হলে ডেঙ্গু আতঙ্কে জীবনযাপন করতে হচ্ছে। হলের সামনের সড়ক সংস্কার ও হলের অসমাপ্ত সংস্কার কাজ শেষ করার বিষয়টি প্রাধ্যক্ষকে অবগত করা হলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। হলের ক্যান্টিন আড়াই মাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন হলের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়টি হলের প্রাধ্যক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও ক্যান্টিন চালু করার বিষয়ে তিনি পদক্ষেপ নেননি।
এছাড়া হলে বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়টি প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করা সত্ত্বেও যথোপযুক্ত কোনো ব্যবস্থা নেননি। দীর্ঘদিন ধরে হলের সেলুন বন্ধ থাকলেও সেটি চালু করার বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেননি। হলের কোনো সমস্যা প্রাধ্যক্ষকে অবহিত করতে গেলে তিনি সহযোগিতামূলক ও শিক্ষকসুলভ আচরণ করেন না। হলের প্রাধ্যক্ষ পার্শ্ববর্তী ইসলামনগর এলাকায় নিজের জমি দখলে হলের কর্মচারীদের ব্যবহার এবং মাঝে মধ্যে হল অফিসকে ব্যক্তিগত সেটেলমেন্ট অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আল আমিন হোসাইন বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ নিজের দায়িত্বের প্রতি উদাসীন। ছাত্রবান্ধব কোনো আচরণ তার মধ্যে পাইনি। ক্যান্টিন চালুর বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে কয়েক দফায় জানালেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। দায়িত্বের প্রতি এমন অবহেলায় আমরা তার দ্রুত পদত্যাগ দাবি করছি।’
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পূরণে সদা তৎপর। তাদের দাবিগুলো দ্রুতই সমাধান করা হবে।