সমাবর্তন নিলেন সাদ্দাম

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন ডাকসুর সাবেক এজিএস এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তনের মূল আয়োজন করা হয়।

এবার ৩০ হাজার ৩৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট এই সমাবর্তনে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ১৩১ জন কৃতী শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীকে ১৫৩টি স্বর্ণপদক, ৯৭ জনকে পিএইচডি, ২ জনকে ডিবিএ এবং ৩৫ জনকে এম ফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১-১২ সেশনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দামের অনার্স (স্নাতক) শেষ করতে সময় নিয়েছিলেন ৮ বছর। ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর আইন বিভাগের স্নাতকের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। সেই ফলাফলে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সেমময় তার অনার্স জীবন শেষ করার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছিল ক্যাম্পাসে। গণমাধ্যমের শিরোনামও হয়েছিলেন প্রভাবশালী এই ছাত্রনেতা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত সুভ্যেনিয়ের (প্রকাশনা) তথ্য মতে, আইন বিভাগ থেকে ২০১৯ সালের স্নাতক পাস হিসেবে এই সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন সাদ্দাম। তালিকায় তার ক্রমিক নম্বর-২২।

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৫২তম সমাবর্তন আয়োজন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০২০ ও ২০২১ সালে সমার্বতনের আয়োজন করতে পারেনি। সে কারণে ২০২২ সালের ৫৩তম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে অংশ নেন সাদ্দাম।

সমাবর্তনে অংশ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে সাদ্দাম হোসেন কোন মন্তব্য করেত রাজি হননি। তবে তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, গ্র্যাজুয়েট হিসেবে সমাবর্তন নেয়ার পাশাপাশি সিনেট সদস্য হিসেবেও সাদ্দাম ৫৩তম সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন। সিনেটের আরেক সদস্য তিলোত্তমা সিকদারের সঙ্গে সমাবর্তন স্থলে ছবিও তুলেছেন সাদ্দাম। সমাবর্তন স্থলে তারা বসেছিলেন সংরক্ষিত আসনে।

আরও পড়ুন: ৯ বছরে অনার্স পাস করলেন সাদ্দাম

জানা যায়, সাদ্দাম হোসেন ২০১১-১২ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষ পার হতে তিনি তিন বছর সময় নেন। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি অকৃতকার্য হন। চতুর্থবারের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে তিনি প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৬ সালের দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষাও পাস করতে পারেননি সাদ্দাম হোসেন। ২০১৭ সালের ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। 

এরপর ২০১৮ সালে তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করেন। সেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়। সেই পরীক্ষায়ও অকৃতকার্য হয়েছিলেন সাদ্দাম। সর্বশেষ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বর্ষের ব্যাচেলর অব ‘ল’ (এলএলবি) এর ফলাফল ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। এতে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। স্নাতকে ফলাফল প্রকাশিত হলে তিনি ২.৭১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: ৮ বছরে অনার্স: সমালোচনাকে ‘বার্থডে গিফট’ বললেন সাদ্দাম

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের একটি আদেশে বলা আছে, আট বছরের বেশি কোনো শিক্ষার্থী ঢাবির নিয়মিত ছাত্র হিসেবে অধ্যায়ন করতে পারবে না। এই আট বছরের ভেতর ছয় বছরে স্নাতক ও দুই বছরের মধ্যে স্নাতকোত্তর করতে হবে। কিন্তু সাদ্দাম হোসেনের শুধু স্নাতক শেষ করতে লেগেছিল ৮ বছর। মূলত, অনুষদের ডিনের বিশেষ ব্যবস্থায় সাদ্দাম হোসেন অতিরিক্ত সময় পেয়েছিলেন স্নাতক শেষ করার জন্য।


সর্বশেষ সংবাদ