২-৫ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে রাবি ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের দাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া  © টিডিসি ফটো

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির নাম করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের দাম ফের বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে সাধারণ মিলে ২ টাকা ও অন্যান্য মিলে ৫ টাকা বৃদ্ধি হবে বলে জানা গেছে। যা চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে কার্যকর হবে। মানের দিকে না তাকিয়ে এভাবে কয়েক মাস পরপর খাবারের দাম বাড়ানোতে শিক্ষার্থীরা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জানা যায়, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে এ বছরের পহেলা জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াসহ ১৭টি হলে প্রতিবেলায় খাবারের পূর্ব মূল্য থেকে ৪ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। মূল্যবৃদ্ধির ফলে দুপুরের খাবার ২৪ টাকার পরিবর্তে ২৮ টাকা এবং রাতের খাবার ১৮ টাকার পরিবর্তে ২২ টাকা করা হয়েছিল। সেখানে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল যে খাবারের দামের সঙ্গে মানও বৃদ্ধি করা হবে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দাম বৃদ্ধির পরেও খাবারের কোন ‍গুণগত মান বৃদ্ধি করা হয়নি। পরিমাণটা সামান্য বেশি দিলেও আগের তুলনায় মানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ যেন শুভঙ্করের ফাঁকি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, খাবারের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় ঠিকমতো খেতে পারেন না তারা। এমনকি প্রতিদিন একই ধরনের তরকারি দিয়ে চলে খাবার পরিবেশন। মাছ বা মাংসের উপস্থিতি থাকলেও তা নামমাত্র। এসব খাবারের মান উন্নত করার পরিমাণ একেবারেই নগন্য। খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্নভাবে দাবি জানিয়ে আসলেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির অজুহাত দিয়ে খাবারের মান বৃদ্ধিতে নজর দিচ্ছে না প্রশাসন।

আরও পড়ুন: ঢাবি হলের ক্যান্টিনে খাবারের দাম বাড়লেও কমেছে মান

দাম বাড়ানো অযৌক্তিক দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বকুল ইসলাম বলেন, ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এটা কি শিক্ষার্থীবান্ধব প্রশাসন? যখন-তখন অজুহাত দেখিয়ে খাবারের দাম বৃদ্ধি করতেছে। এইতো কিছুদিন আগেও মিল প্রতি ৪ টাকা বাড়িয়েছে। এখন আবার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের দাম বাড়ালেও খাবারে মান বাড়ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, শিক্ষার্থীদের জীবনমান সহজ ও উন্নত করতে প্রশাসন কাজ করবে। কিন্তু সেটা কি হচ্ছে? এইতো কিছুদিন হলো ক্যাফেটেরিয়াসহ হলগুলোতে খাবারের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু মানের কি আদৌ পরিবর্তন হয়েছে? খাবারের মান না বাড়িয়ে ঘন ঘন দাম বাড়ানোটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং শিক্ষার্থী পরিপন্থী।

নতুন করে খাবারের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রশাসক ড. একেএম আরিফুল ইসলাম বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পূর্বের দাম অনুযায়ী আমরা দীর্ঘদিন যাবত লোকসানে আছি। বিশেষ করে সাধারণ মিলে আমাদের বেশি লোকসান হয়।

তিনি বলেন, দৈনন্দিন প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী সাধারণ মিল খেয়ে থাকে। এভাবে লোকসান নিয়ে চলা আমাদের জন্য কষ্টকর। দাম বাড়ানো ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই। সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করে সাধারণ মিলে ২টাকা বাড়িয়ে ৩০টাকা ও অন্যান্য মিলে পাঁচ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, নতুন করে দাম বৃদ্ধি করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোন কর্তৃপক্ষ আমাকে জানায়নি। এই বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। দাম বৃদ্ধি করতে চাইলে একটা সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বৃদ্ধি করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন নতুন করে আবার দাম বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে বিষয়ে আমি জানবো। তারপর একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবো।


সর্বশেষ সংবাদ