জরিমানা বাড়িয়েও ক্লাসে আনা যাচ্ছে না চবি শিক্ষার্থীদের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের কম হলে দিতে হয় জরিমানা। কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত জরিমানার পরিমাণ ৬০০ টাকা। কিন্তু বিভিন্ন বিভাগে জরিমানা নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। উপস্থিতির শতকরা হার কয়েক ভাগে বিভক্ত করে নির্ধারণ করে দেওয়া হয় জরিমানার পরিমাণ। একারণে শিক্ষার্থীদের গুনতে হয় ৬০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। যা নির্ধারিত জরিমানা থেকে প্রায় সাড়ে ১৬ গুণ বেশি।

কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছর শতকোটি টাকা ভর্তুকি দেয় সরকার। তবে দিনদিন বেড়েই চলছে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বিমুখতা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসমুখী করতে নেই কোনো কার্যকর উদ্যোগ। তবে জরিমানাসহ বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেও শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।  

তবে ক্লাসে ধরে রাখতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুধু আছে মোটা অংকের জরিমানা এবং পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার নিয়ম। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আছে সর্বোচ্চ জরিমানা আদায়কারী বিভাগগুলোর তালিকায় এক নম্বরে। এবিভাগের জরিমানার হার ১ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। বর্তমানে তাদের জরিমানার পরিমাণ প্রায় ৩০০০-৫০০০ টাকা। জানা যায়, সম্প্রতি উপস্থিতির হার কম থাকায় এই বিভাগের মাস্টার্স পরীক্ষায় ১৪ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।  

আরও পড়ুন: চবি ভর্তির সাবজেক্ট চয়েজের ফল আজ

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক শিক্ষার্থী পারিবারিক এবং নিজের খরচ বহন করতে পার্ট-টাইম বিভিন্ন কাজেও জড়িত থাকেন। আবার অনেকসময় কোনও কোনও শিক্ষকের পাঠদান শিক্ষার্থীদের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেহেতু ৬০০ টাকা জরিমানা নির্ধারণ করে দিয়েছে, তাহলে অতিরিক্ত মোটা অংকের এ জরিমানা আদায়ের যৌক্তিকতা কোথায়?

চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি ড. মো. শহীদুল হক জানান, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতিকে উৎসাহিত করতে এবং অনুপস্থিতি রোধ করতে বিভাগীয় অ্যাকাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জরিমানা করা হয়।  

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অনেক সময় জরিমানা আদায় করা হয় না। অনেক শিক্ষার্থীদের জরিমানা সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়, আবার অনেকের জরিমানা কমিয়ে দেওয়া হয়।

চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি ড. সুজিত কুমার দত্ত জানান, জরিমানা থেকে শুরু করে বিভাগের সকল সিদ্ধান্ত অ্যাকাডেমিক কমিটির সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতেই হয়।

চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান জানান, এটা সম্পূর্ণ বিভাগের সিদ্ধান্ত। কোনও বিভাগ যদি মনে করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা যেকোনও পদক্ষেপ নিতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ