নিয়ম বহির্ভূত ২৮ কর্মকর্তার পদোন্নতি: ফুল কমিশনের একদিন আগে ইউজিসিতে হট্টগোল

ইউজিসি
ইউজিসি  © সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) ফুল কমিশন ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২৮ কর্মকর্তাকে পদোন্নতির বিতর্ক যেন থামছেই না। শুধু দাবির প্রেক্ষিতে আইন-নীতিমালার তোয়াক্কা না করে পদোন্নতি দেয়ার পর ইউজিসির অন্তত ৭০ থেকে ৮০ জন কর্মকর্তা ওই পদোন্নতির বিরোধিতা করে জ্যেষ্ঠ্যতা অক্ষুন্ন রাখার দাবি আবেদন জমা দিয়েছেন। আবার একই পদ্ধতিতে পদোন্নতির দাবিও জানিয়েছেন কেউ কেউ। যদিও ফুল কমিশন ছাড়া এ ধরনের পদোন্নতির বৈধতা আদায় নিয়ে এবার হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে কমিশনে।

মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) প্রথমে কমিশন সচিবের দপ্তরে কথা কাটাকাটি ও পরে চেয়ারম্যানের দপ্তরে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, পদোন্নতির আবেদন জমা দেয়া বিভিন্ন দপ্তরের বেশকিছু কর্মকর্তা সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলামের দপ্তরে গেলে সেখানে বাগ্বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে সেখান থেকে চেয়ারম্যান দপ্তরে গেলে সেখানেও পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তা এবং বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মাঝে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

এ প্রসঙ্গে ইউজিসির সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তেমন কিছু হয়নি। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা আমার দপ্তর এবং অন্য সদস্যদের দপ্তরে গিয়ে তাদের নানা রকমের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির কথা শেয়ার করেন। তাদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। পরে সদস্য ও চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা শান্ত হয়ে যান।

ঘটনায় যুক্ত থাকা পদোন্নতি বঞ্চিত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সম্প্রতি ইউজিসি ২৮ কর্মকর্তাকে ফুল কমিশন ছাড়া পদোন্নতি দেয়। আমরা জানতে পারি আগামীকাল (২৯ জানুয়ারি) ইউজিসির ফুল কমিশন থেকে বিষয়টির অনুমোদনের কথা হচ্ছে। এমনকি ইউজিসি এমন একটি প্রস্তাব পাস করবে; যাতে পরবর্তীতে এই পদোন্নতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা না যায়। ফলে আমরা কমিশনের এমন অনিয়ম নিয়ে কথা বলতে সচিবের দপ্তরে গেলে সেখানে আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয়। পরে সেখান থেকে চেয়ারম্যানের দপ্তরে গেলে সেখানেও আমাদের সাথে অশোভন আচরণ করা হয়।

জ্যেষ্ঠ্যতা অক্ষুন্ন রাখার দাবি জানিয়ে কমিশন চেয়ারম্যানের কাছে ৩০ কর্মকর্তার আবেদন

জানা গেছে, দিনভর এসব ঘটনার পরে দু’পক্ষের কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন দুই সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এবং অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান। এসব বিষয়ে জানতে ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ এবং সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের সঙ্গে কথা বলতে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। 

জ্যেষ্ঠ্যতা অক্ষুন্ন রাখার দাবি জানিয়ে কমিশন চেয়ারম্যানের কাছে আরো কয়েকজন কর্মকর্তার আবেদনের কপি

পরে ইউজিসির আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে আমি তেমন কিছু বলতে পারছি না। এসব বিষয়ে পরে কথা বলতে হবে।

এর আগে গত বছরের ২৮ নভেম্বর শুধু দাবির প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ সদস্য-কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে কমিশনের ২৮ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আইন-নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই সম্প্রতি কমিশনে অনুষ্ঠিত এক ‘ক্লোজ ডোর’ বৈঠকে এসব পদোন্নতি দেওয়া হয়। 


সর্বশেষ সংবাদ