ইফতারের ফজিলত ও সুন্নতি খাবার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৬ PM , আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৯ PM
ইফতার ইসলামের অন্যতম একটি স্তম্ভ ‘রোযা’র একটি পর্যায়। ভোর থেকে সারা দিন সিয়াম পালন শেষে সূর্যাস্তের পর প্রথম যে আহার গ্রহণ করা হয়, তাকে ইসলামের পরিভাষায় ‘ইফতার’ বলা হয়। যে খাদ্য বা পানীয় দ্বারা ইফতার করা হয়, বলা হয় তাকে ‘ইফতারি’। ইফতারের আগেই ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করা এবং যথাসময়ে ইফতার করা সুন্নাত।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে রোজাদারের দোয়া আল্লাহর কাছে এতই আকর্ষণীয় যে আল্লাহ তায়ালা রমজানের সময় ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, ‘রমজানে তোমাদের পূর্বের দায়িত্ব মওকুফ করা হলো এবং নতুন দায়িত্বের আদেশ করা হলো, তা হলো আমার রোজাদার বান্দাগণ যখন কোনো দোয়া মোনাজাত করবে, তখন তোমরা আমিন! আমিন!! বলতে থাকবে।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)।
হাদিসে কুদসিতে এসেছে, মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে।’ (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)।
হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে।’ (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩)।
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। ইফতারের আগে এই দোয়া পড়া সুন্নাত, ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু’। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার জন্য আমি রোজা রেখেছি, আপনার রিজিক দ্বারা ইফতার করছি। (আবু দাউদ, সাওম অধ্যায়)।
কিছু আধা-পাকা অথবা পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তা না পাওয়া গেলে পানি দিয়ে ইফতার করাও সুন্নাত। আনাস (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) নামাযের পূর্বে কিছু আধা-পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তা না পেলে পূর্ণ পাকা (শুকনা) খেজুর দিয়ে এবং তাও না পেলে কয়েক ঢোক পানি খেয়ে নিতেন।’
তিনি আরও বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, "যে ব্যক্তি খেজুর পায়, সে যেন তা দিয়ে ইফতার করে। যে ব্যক্তি তা না পায়, সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ, তা হল পবিত্র।"
ইবনুল কাইয়েম (রা.) বলেন, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) খেজুর দ্বারা ইফতার করতে এবং তা না পাওয়া গেলে পানি দ্বারা ইফতার করতে উৎসাহিত করতেন। আর এ হল উম্মতের প্রতি তাঁর পরিপূর্ণ দয়া ও হিতাকাঙ্খার নিদর্শন। পেট খালি থাকা অবস্থায় প্রকৃতি (পাকস্থলী)কে মিষ্টি জিনিস দিলে তা অধিকরূপে গ্রহণ করে এবং তদ্দবারা বিভিন্ন শক্তিও উপকৃত হয়; বিশেষ করে দৃষ্টিশক্তি এর দ্বারা বৃদ্ধি পায়। মদিনার মিষ্টি হল খেজুর। খেজুর মদিনাবাসীর মিষ্টান্ন। খেজুরের উপরই তাদের লালনপালন। খেজুর তাদের প্রধান খাদ্য এবং তা-ই তাদের সহযোগী খাদ্য। আর অর্ধপক্ক খেজুর তাদের ফলস্বরূপ।