চাকরির বাজারে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চহিদা কেমন?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৩, ০৮:৪২ PM , আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩, ০৬:৫৯ PM
ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদভুক্ত বিষয়সমূহের একটি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সহ বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়। এই বিভাগে যান্ত্রিক নকশা, উৎপাদন ও রক্ষনাবেক্ষনের কাজ এবং তাত্ত্বিক ব্যবহার শেখানো হয়।
সাধারণত বৃহৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের টারবাইন, অল্টারনেটর ও জেনারেটরের নকশা, সংযোজন, বাস্তবায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকেন এই ইঞ্জিনিয়াররা। এছাড়াও বিমানের ইঞ্জিন, কমবাশ্চন ইঞ্জিন, এয়ারকন্ডিশনিং মেশিন ও রেফ্রিজারেটর উৎপাদন কারখানার মান নিয়ন্ত্রণ ও কমিশনিং তাদের কাজ।
আরো পড়ুনঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হওয়ার পথে অতিথি পাখির আগমন
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর পড়াশোনার ক্ষেত্র ও চাকরি সুবৃহৎ; মহাসাগরের তলদেশ থেকে মহাশূন্য পর্যন্ত মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এর বিস্তিৃতি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, শিল্প-কারখানা সমূহে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও প্রোডাকশন এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কিত কাজেও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হয়। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন, পরিচালনা, মান নিয়ন্ত্রণ, যন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ সব কিছুতেই থাকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের উপস্থিতি।
যান্ত্রিক সভ্যতা বিকাশের ফলে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চাহিদা ক্রমবর্ধমান। পৃথিবীর শিল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা বাড়ছে। জাহাজ শিল্প ও মোটরযান শিল্পের বিকাশ এবং জ্বালানী ও শক্তি সংকট উত্তরণে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গুরুত্ব দেয়ার ফলে এর চাহিদা বেড়েই চলছে।
এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মেকাট্রনিক্স, রোবোটিক্স, ন্যানো প্রযুক্তি, বলবিদ্যা, পদার্থ এবং ডিজাইনে দক্ষ হয়ে ওঠে। এছাড়া চ্যালেঞ্জ গ্রহণ, পরিশ্রমপ্রিয়তা, ফিল্ডওয়ার্ক প্রভৃতির মনোভাব গড়ে উঠে তাদের। ক্ষেত্র বিস্তৃত হওয়ায় উচ্চ শিক্ষারও রয়েছে বেশ সুযোগ।
অক্সফোর্ড, ক্যামব্রীজ, মাস্যাচুসেট্স ইন্সটিটিউত অফ টেকনোলজি, হার্ভার্ড এবং ক্যালিফোর্নিয়াসহ খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার সুযোগ রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল রোবোটিক্স প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনের মাধ্যমে দেশের অনেকেই এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশীপ নিয়ে পড়াশোনা করছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন ও রেলওয়ে সেক্টরসহ সকল যন্ত্রযান নির্ভর সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পকারখানায় যন্ত্র ও মেশিনারিজ শাখায় এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীসহ সকল সামরিক বাহিনীতে ট্যাংক, যুদ্ধজাহাজ, হেলিকপ্টার, নৌজাহাজ, অস্ত্র, গোলা-বারুদ ইত্যাদি তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে যন্ত্রপ্রকৌশলী হিসেবেও রয়েছে চাকুরির সুযোগ।
এছাড়াও সব ধরনের আকাশযান ও নৌযান নির্ভর সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রসমূহ, দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে, গণপূর্ত অধিদপ্তর, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন গবেষণা ইনস্টিটিটিউটে অ্যাকাডেমিশিয়ান হিসেবে শিক্ষকতার সুযোগ রয়েছে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের।