ঋতু পরিবর্তনে হঠাৎ ঠান্ডা-সর্দি প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

সর্দি জ্বর
সর্দি জ্বর  © প্রতীকী ছবি

শীতের শুরুতেই আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে সর্দি-ঠান্ডা সাধারণ বিষয় হয়ে দারিয়েছে। নভেম্বর আসছে মানে হলো আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। এই সময়ে প্রকৃতির সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।

দিনের বেলায় রোদের কারণে বেশ গরম লাগলেও সন্ধ্যা হতেই কমতে শুরু করে তাপমাত্রা। গরম-ঠান্ডার এই সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না অনেকের শরীর। গলা ব্যথা, কাশি, ঠান্ডা লাগা, নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো সমস্যা এই ঋতুতেই বেশি হয়।

সাধারণত ঠান্ডা লাগা বা সর্দিজ্বরের বেশকিছু সাধারণ উপসর্গ থাকে যেগুলো শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে একইরকম হয়ে থাকে। নাক বন্ধ হওয়া, সর্দি থাকা, গলা ব্যাথা, মাথা ব্যাথা, মাংসপেশীতে ব্যাথা, কাশি, হাঁচি, জ্বর, কানে ও মুখে চাপ অনুভব করা, স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসা।

হঠাৎ তাপমাত্রা কমে গেলে আর্দ্রতার পরিমাণও কমে যায়। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে নিজেকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখা জরুরি। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে সর্দি-কাশি হলে তা দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় জেনে নিন-

আরও পড়ুন: মাদক কারবারির হাতে খুন হন ফারদিন! 

১. ফ্লু ভ্যাকসিন নিন। এটি ভাইরাল ইনফেকশন থেকে আপনাকে দূরে রাখতে কাজ করবে।

২. এসময় আবহাওয়ার ধরন বুঝে পোশাক পরুন। গরম পোশাক পরার পর হালকা আরাম বোধ করার সঙ্গে সঙ্গেই আবার খুলে রাখবেন না। তাপমাত্রা বাড়লে তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে শরীরকে।

৩. খুব সকালে কিংবা সন্ধ্যায় জরুরি না হলে বাইরে যাবেন না। এসময় দিনের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দূষণের মাত্রা বেশি এবং তাপমাত্রা কম থাকে। 

৪. পুরো শরীর আবৃত রাখে এবং আপনাকে উষ্ণতা দিতে পারে এমন পোশাক পরুন। 

৫. বেশি বেশি তরল খাবার ও ফলমূল খান। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় হঠাৎ অসুখে পড়ার ভয় কম থাকে।

এ সময়ে অসুখ প্রতিরোধে আরও কিছু পরামর্শ-

১. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কিংবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। সাইট্রাস জাতীয় ফল, ব্রকোলি, আদা, রসুন, সবুজ শাক, দই, বাদাম ও তৈলাক্ত মাছ যোগ করুন খাবারের তালিকায়। 

২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। নিয়মিত হাত ধোওয়ার অভ্যাস করুন। জীবাণু সাধারণত একজনের মাধ্যমে অন্যজনের কাছে ছড়ায়। নিয়মিত হাত পরিষ্কার করলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমে। 

৩. সঙ্গে সব সময় টিস্যু রাখুন। কাশি বা সর্দি মোছার জন্য টিস্যু ব্যবহার করুন। ফলে বাতাসের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

আরও পড়ুন: সিনিয়র ম্যানেজার নেবে ব্র্যাক, নিয়োগ ঢাকায়।

এছাড়া ঘরোয়া কিছু খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে আপনি এসব রোগ প্রতিরোধ করতে পারবেন। যেমন- 

গাজরের স্যুপ

গাজর আমাদের চোখের দৃষ্টি বাড়ানোর জন্য পরিচিত। কিন্তু এছাড়াও এর আরও অনেক গুণ রয়েছে। গাজরে থাকা ভিটামিন এ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শ্বাসযন্ত্রের অসুখ দূরে রাখে। এক বাটি গরম স্যুপ আপনাকে অনেকটাই আরাম দেবে। গাজরের স্যুপ খেলে তা আপনাকে সর্দি-কাশির সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করবে।

New Project (11)

বেসনের সিরা

এটি একটি আয়ুর্বেদিক রেসিপি যা মূলত পাঞ্জাবে তৈরি করা হয়। বেসন, ঘি, দুধ, হলুদ ও গোল মরিচ দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। এটি গলা ও নাকের জন্য প্রশান্তিদায়ক গরম পানীয়। বিশেষজ্ঞের মতে, গোল মরিচ, আদা, হলুদ এবং এ অন্যান্য উপাদানগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। তাই এই মৌসুমে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচতে এই পানীয় পান করতে পারেন।

হলুদ ও দুধ

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী উপাদান হিসেবে হলুদ সারা বিশ্বেই পরিচিত। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একগ্লাস দুধ ও এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশিসহ আরও অনেক অসুখ দূরে থাকে।

New Project (12)

ঘরোয়া কাশির সিরাপ

আদা, মধু ও লেবুর রস দিয়ে এই ঘরোয়া কাশির সিরাপ তৈরি করা হয়। এই তিন উপাদানই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হিসেবে পরিচিত। মধুতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান রয়েছে। জার্নাল পেডিয়াট্রিক্সে প্রকাশিত ২০১২ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মধু কাশি দূর করতে সাহায্য করে।


সর্বশেষ সংবাদ