ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাজিমাত: রাবি শিক্ষার্থী শুভর মাসিক আয় ২ লক্ষ টাকা

আশরাফুল ইসলাম শুভ
আশরাফুল ইসলাম শুভ  © টিডিসি ফটো

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম আশরাফুল ইসলাম শুভর। তার বয়স ২৬ বছর। তিনি পৌরসভার মোহনপুর গ্রামের হাজী আনিছুর রহমান ও শিরীনা পারভীন স্বপ্না দম্পতির বড় ছেলে। মনিরামপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে বিবিএ ও এমবিএ পাস করেন। ২০২১ সালে প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানার পর গুগল এবং ইউটিউব ঘেটে, কিছু বিষয় রপ্ত করেন তিনি। এরপর বন্ধু প্রান্তরের অনুপ্রেরণায় ফ্রিলান্সিং শুরু করে আজ তার এই সফলতা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করেন যশোরের মনিরামপুরে। কয়েক বছর আগে, অনলাইনে মাত্র ২৫ ডলার আয় দিয়ে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার। এখন মাসে আয় করেন দুই হাজার ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই লাখ  টাকা বেশি। একইসাথে তিনি কর্মরত আছেন প্রান্ত আইটি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠানের প্রধান অপারেটিং অফিসার হিসাবে। কঠোর পরিশ্রম, প্রবল ইচ্ছা ও মানসিক শক্তির বলে খুব অল্প সময়ে সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 

বর্তমানে আশরাফুল শুভ ২০টি দেশের প্রায়  একশ' জনেরও বেশি ক্লায়েন্ট রয়েছে। ভিডিও এডিটিংসহ অনলাইন প্রতিষ্ঠানের টেকনিক্যাল ও কারিগরি একাধিক বিষয়ে, খুব দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন । মাসে আয় করছেন লক্ষাধিক টাকা।

আশরাফুল ইসলাম শুভ বলেন, শুরুতে কোনো কিছু বুঝতাম না। গুগল ও ইউটিউব ঘেটে শিখতে লাগলাম। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ বন্ধু মিলে (শাকিল, মাহির ও আম্মান) একসাথে কাজ শুরু করেন। কিন্তু সফলতার চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি হতে লাগল। এখনকার মতো তখন এত কোর্সের ব্যবস্থাও ছিল না। এরপর বন্ধু তাসনিমুল হাসান প্রান্তর অনুপ্রেরণা থেকে আবারও কাজ শুরু করে, আজকের এই সফলতা পেয়েছি। প্রথম ২৫ ডলারের কাজ পাই, ওই কাজের সুবাদে ধীরে ধীরে বিদেশি ক্লায়েন্টও খুঁজে পেয়ে যাই। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।

শুভ মনে করেন, পড়ালেখার পাশাপাশি প্রত্যেকেরই কিছু দক্ষতা থাকা দরকার। যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দেখাবে। নিজে কাজকর্ম করে আর্থিক উপার্জনের সুযোগও তৈরি করে দিবে। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম পরিশ্রম এবং মানসিক ইচ্ছে শক্তি থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

এই মেধাবী তরুণ বর্তমানে তরুণ- তরুণীদের ক্যারিয়ার বিষয়ক স্কিল অর্জনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান বৃহৎ আকারে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন। 

তিনি আরও বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি আয় করা শুরু করছি, বর্তমানে পরিবারকে সাপোর্ট দিতে পারছি এতেই আমি অনেক খুশি। কোনো কাজে হতাশ হওয়া যাবে না। লেগে থাকতে হবে। লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। কেউ কেউ শুরুতে যেকোনো কাজে খুব আগ্রহী হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই আগ্রহ শেষ হয়ে যায়। রাতারাতি কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। এসব বুঝতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ