দিনে চার ঘণ্টা কাজ, এতেই মাসে দুই লাখ আয় তৃষ্ণার

বাবা-মায়ের সঙ্গে তৃষ্ণা দেও
বাবা-মায়ের সঙ্গে তৃষ্ণা দেও  © সংগৃহীত

প্রতিদিন গ্রামে বিদ্যুৎ থাকে চার থেকে পাঁচ ঘন্টা। ইন্টারনেটের গতিও নিম্নমানের। এ দিয়েই সাদামাটা একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে মাসে মাসে প্রায় দু’লাখ টাকা আয় করছেন তৃষ্ণা দেও। তিনি শেরপুরের গারো সম্প্রদায়ের একমাত্র ফ্রি-ল্যান্সার। অস্ট্রেলিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন।

শেরপুরের কাকরকান্দির গারোপল্লীর তৃষ্ণা দেও ভোরের আলো ফুটতেই উঠোনে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে কম্পিউটারটি খুলে বসে যান গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজে। ২০১৯ সালে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে এমবিএ করে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন তৃষ্ণা দেও। তবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি। কিছুদিন পর চলে যান কাকরকান্দিতে। এ সময় ফ্রিল্যান্সিংয়ের কথা জানতে পারেন।

দেরি না করে ময়মনসিংহের একটি আইটি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন গ্রাফিকস ডিজাইনে। শুক্র ও শনিবার গ্রাম থেকে যেতেন ক্লাস করতে। প্রশিক্ষণ শেষের প্রায় ছয় মাস পর তৃষ্ণা ৮৬ ডলারের কাজ পান। কাজের মান ভালো হওয়ায় আরও সাতটি কাজ পেয়ে যান তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ছোটঘরে বসেই মাসে আয় করছেন দুই লাখ টাকার মতো।

আরো পড়ুন: হারিকেন জ্বালিয়ে পড়া রকিবুল এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

তৃষ্ণা জানান, ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পোস্টারের নকশা, ভিজিটিং কার্ড, রেস্টুরেন্টের খাবারের তালিকা, ক্যাটালগ ডিজাইনসহ অনেক ধরনের কাজ করছেন। শুরুতে কাজ করতে সমস্যা হয়েছিল। বাংলাদেশের এক গ্রাহক একটি কাজের নকশা পরিবর্তন করিয়েছিলেন ১৭ বার। ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা বাড়ে। ভালো কাজের অর্ডার পেতে থাকেন।

তৃষ্ণা বলেন, বর্তমানে তিনি প্রতি মাসে কমপক্ষে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। তবে বিদ্যুৎ আর ইন্টারনেট ভালো হলে মাসে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হয়।

বাবা রবার্ট রেমা জানান, তৃষ্ণার মাধ্যমে এই পেশা নিয়ে আগ্রহ ছড়িয়েছে সম্প্রদায়ের মধ্যে। নিজের কাজের পাশাপাশি গ্রামের মেয়েদেরও ফ্রিল্যান্সিং শেখাচ্ছেন। ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে দক্ষ করতে চান তৃষ্ণা দেও গ্রামের ছেলে-মেয়েদের।


সর্বশেষ সংবাদ