সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা না করায় তোপের মুখে জয়-লেখক

ঢাবিতে তোপের মুখে জয়-লেখক, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার দাবি
ঢাবিতে তোপের মুখে জয়-লেখক, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার দাবি  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আসার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাকর্মীদের একাংশের তোপের মুখে পড়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। শনিবার (১৪ মে) দুপুরে মধুর ক্যান্টিনে আসার পরে এই ঘটনা ঘটে। এসময় সম্মেলন প্রত্যাশীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এদিন দুপুরে জয় ও লেখক মধুর ক্যান্টিনে আসার আগে থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলেন সম্মেলন পদপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। জয় ও লেখক আসার পর নেতারা তাদের কাছে সম্মেলন কবে হবে, দেরি হচ্ছে কেন এসব বিভিন্ন বিষয়ে তাদেরকে প্রশ্ন করেন। তাদের কথা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যখন সম্মেলন করার নির্দেশনা দেবেন তখনই করা হবে। কিন্তু ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক সম্মেলনের তারিখ ঠিক করা হয়।

জয় ও লেখকের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা না করে এভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর ছেড়ে দেয়ার বিষয়টিকে সম্মেলন প্রত্যাশীরা ‘নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে জয় ও লেখক ওবায়দুল কাদেরের  দেয়া সম্মেলনের নির্দেশনাকে তার মনগড়া কথা বলে অভিহিত করেন বলে জানান সংগঠনটির সহ-সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এসব আসলে নাটক ছাড়া কিছুই নয়। ছাত্রলীগের তো গঠনতন্ত্র রয়েছে। তারা কার্যনির্বাহী সংসদের মিটিং ডাকবে। সেখানে এ বিষয়ে কথা হবে। কিন্তু তারা এসব না করে শুধু প্রধানমন্ত্রীর উপরে গড়ায় দিচ্ছেন। এটা মূলত এক প্রকারের নাটক।

উপ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন বলেন, এটা একটা ফাঁদ। যুব মহিলা আওয়ামী লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ এই তিন সংগঠনকে ওবায়দুল কাদের সম্মেলনের নির্দেশ দিয়েছেন। যুব মহিলা লীগ আজকে তাদের সামনে সম্মেলনের নির্দেশনার কথা বলল। কিন্তু এরপরও জয়-লেখক বলতেছে এ ব্যাপারে তারা এখনো কোন নির্দেশনা পায় নাই। এটা মূলত একটা ফাঁদ। তারা এভাবে সম্মেলনের তারিখ পেছাবে।

আরও পড়ুন: শেষ সময়েও অভিযোগের শেষ নেই

সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, আমরা তাদেরকে বললাম যে ওবায়দুল কাদের আপনাদের বলেছিল দুই দিনের মধ্যে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করার জন্য। কিন্তু এখনো আপনারা এটা করতেছেন না কেন? তারা বলে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তারা সম্মেলনের বিষয়ে বলবে। এরপর নেত্রী যে তারিখ দেবে সেদিন সম্মেলন হবে। কিন্তু এটা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র নয়।

আরেক সহ-সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সম্মেলনের নির্দেশনা দিয়েছেন। আপনারা সম্মেলন আয়োজনে কতটা কাজ করছেন। তারা প্রথমে বলেন- এটা নেত্রীর কোন নির্দেশনা না। ওবায়দুল কাদের নিজের মন গড়া কথা বলেছেন।

তিনি আরো বলেন, জয়-লেখক ছাত্রলীগের সম্মেলনকে মন গড়া বলার পর আমরা তাদের প্রশ্ন করি যে, যদি মন গড়াই হয় তাহলে যুব মহিলা লীগ ও মহিলা লীগ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিল কীভাবে যে তারা আওয়ামীলীগের নির্দেশে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই কথা বলার পর জয়-লেখক বলেন, কাদের ভাই নিজেই তো আমাদের ব্যাপারে কনফিউজড। 

এর আগে ৭ মে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সহযোগী সদস্যগুলোকে সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। গত মঙ্গলবার (১০ মে) সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

ওই সভায় উপস্থিত থাকা ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দু-এক দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারিখ নির্ধারণের জন্য নির্দেশনা দেন কাদের। তবে, আওয়ামী লীগের দপ্তর সেলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জয়-লেখক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।


সর্বশেষ সংবাদ