শিবির-ছাত্রদল কি মুখোমুখি হচ্ছে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১৪ PM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ PM
গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দাবি উঠেছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের। কিন্তু এই দাবির পক্ষে বিপক্ষে মতামত গড়ে উঠতে দেখা যায় তার ঠিক পরেই। বিভিন্ন মহল থেকে জুলাই আগস্টের আন্দোলনে ছাত্র সংগঠনগুলোর অবদান নিয়ে নানা আলোচনার পর ভবিষ্যতে শিক্ষালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতির চেহারা কেমন হবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।
অতি সম্প্রতি কয়েকটি ক্যাম্পাসে বড় দুই ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদলের মধ্যে অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে দেখা গেছে। তাই সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতি আবারও পুরোনো চেহারা নিয়ে হাজির হবে কি না সে ভয় দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে আসে ছাত্রশিবির। তিন সদস্যের আংশিক কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে আসার পর গত ১৯শে নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি সর্বদলীয় মতবিনিময় সভায় অংশ নেয় সংগঠনটি।
সভাটি ডেকেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উদ্দেশ্য ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা। কিন্তু সভা শুরুর কিছুক্ষণ পরই ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে প্রথম আপত্তি তোলা হয়। পরে কয়েকটি বাম সংগঠনও এতে যোগ দেয়। আবার ছাত্রশিবিরের পক্ষেও বক্তব্য রাখে কয়েকটি সংগঠন। পক্ষে-বিপক্ষে, পাল্টা-পাল্টি স্লোগানে একপর্যায়ে বৈঠক পণ্ড হয়ে যায়। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রশিবির আত্মপ্রকাশ করার পর সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিল ছাত্রদলকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির প্রকাশ্যে আসার পর এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো কয়েকটি বাম সংগঠন। পরে ছাত্রদলও নানা প্রশ্ন তুলেছে এটা নিয়ে। এই ইস্যুতে দুই দলের কর্মী-সমর্থকদেরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পাল্টা-পাল্টি পোস্ট দিতে দেখা যায়। এরমধ্যেই গত ৭ই নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’ উপলক্ষ্যে বিএনপির দলীয় পোস্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সাঁটিয়ে দেয় ছাত্রদল।
বিষয়গুলো নিয়ে ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদলের মন্তব্য নিয়েছে বিবিসি বাংলা। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের কারণে কোথাও সংঘর্ষ হচ্ছে না। আপনি যদি বলেন যে, ছাত্রশিবিরের কারণে সংঘর্ষ হচ্ছে, তাহলে এটা তো তথ্য-প্রমাণহীন একটা পারসেপশন থেকে বলা হলো। আমরা যেটা প্রত্যাশা করি যে, আমরা একসঙ্গে সবাই বসতে পারি, আলোচনা করতে পারি। প্রত্যেকটা ক্যাম্পাসেই নিজস্ব প্রশাসনিক নিয়মকানুন রয়েছে। সেটার আলোকেই ছাত্ররা হলে সিট পাবে এবং তাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে এটাই আসলে ছাত্রশিবির প্রত্যাশা করে।’
এ প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির জানান, ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ‘নামে-বেনামে প্রোপাগান্ডা ছাড়াচ্ছে শিবির’। তিনি বলেন, ‘পাঁচই অগাস্টের পরে তারা আত্মপ্রকাশ করেছে। আত্মপ্রকাশ করেই ছাত্রদলের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে প্রোপাগান্ডা তৈরি করছে। এর মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা আমাদের একটা বিভেদ তৈরি করতে চায়। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ঠিক এ চেষ্টাই তারা করেছে। তারা সেখানে হল দখল করেছে। কিন্তু ছাত্রদলের ছেলেরা যখন হলে উঠতে গিয়েছে, তারা সেখানে বাধা দিয়েছে।’