হত্যা মামলার আসামিকে চেনেন না মামলার বাদী!
- ভোলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪০ AM , আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪০ AM
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে শেখ হাসিনা সহ দলটির এমপি-মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের নামে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয় হত্যা মামলা । গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় সিএনজি চালক সবুজ হত্যার একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে মোহাম্মদপুর থানা এলাকার ময়ুর ভিলার সামনে ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের কচুয়াখালী এলাকার বাসিন্দা ও মোহাম্মদপুরের সিএনজি চালক সবুজ হত্যার শিকার হন। এরপর ছোট ভাই সবুজ হত্যার অভিযোগে ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪’শ থেকে ৫’শ জনকে আসামি করে তার বড় ভাই মনির হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় ৪৯ নম্বর আসামি করা হয়েছে বরিশাল বিভাগের সুনামধন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোলার লালমোহন উপজেলার হা-মীম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এবং জাতীয় দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকার লালমোহন উপজেলা প্রতিনিধি মো. রুহুল আমিনকে।ঢাকার হত্যা মামলায় নিজের নাম দেখে বিস্মিত হন তিনি।
অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন জানান, গত আগস্ট মাসে আমি ঢাকায়ই যাইনি। এছাড়া আমি কখনো কোনো রাজনীতি করিনি। তবে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং সাংবাদিকতা করার কারণে আমাকে সকল দলের লোকজনের কাছেই যেতে হয়। আমার নামে ঢাকায় হত্যা মামলা করা হয়েছে, অথচ ৪ আগস্টের আগে ও পরে আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে লালমোহনেই ব্যস্ত সময় পার করেছি। মামলায় যে তারিখ এবং সময় উল্লেখ করা হয়েছে তখন আমি লালমোহনে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ছিলাম। আমার প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেই তার প্রমাণ রয়েছে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করবো; উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ মামলায় যেন আমাকে হয়রানি না করা হয়। তবে যারা ওই ঘটনার সঙ্গে সত্যিই জড়িত, আমিও তাদের বিচার চাই।
ভাই হত্যার অভিযোগে দায়ের করা ওই হত্যা মামলার বাদি মো. মনির হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনকে আমি চিনি না, শুধু তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম শুনেছি। মামলাটির এখনো চার্জশীট হয়নি, চার্জশীটের সময় নির্দোষ কোনো ব্যক্তির যেন নাম না থাকে সেটি দেখবো।
এদিকে অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিনের নামে কখনো কোনো মামলা অথবা কোনো অভিযোগও হয়নি নিশ্চিত করে লালমোহন থানার সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাহবুব উল আলম জানান, যতটুকু জানি; ঢাকার ওই হত্যা মামলায় উল্লেখ করা ঘটনার দিন তিনি লালমোহনে ছিলেন। তিনি ব্যক্তি হিসেবেও একজন ভালো মানুষ।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় জামিন স্থগিত রানাপ্লাজার মালিক সোহেল রানার
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. সুমন হোসেন বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। নিরপরাধ কেউ থাকলে তারা জামিন নিতে পারেন।
এদিকে গণহারে এমন মামলায় প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারেন বলে শঙ্কা করছেন লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম দুলাল। তিনি বলেন, ভিন্নমত পোষণ কিংবা কোনো শত্রুতা উদ্ধারের জন্য যেন কোন মামলা না হয়, এটাই আমরা আশা করি। তবে যারা প্রকৃত অপরাধী তারা যেন শাস্তির আওতায় আসেন সেটিরও দাবি জানাই।