পুলিশের গুলিতে বেরোবি ছাত্র সাঈদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ নেই এফআইআরে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:২৩ PM , আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৭ PM
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই নিরস্ত্র আবু সাইদকে লক্ষ্য করে পুলিশের গুলি ছোড়ার ভিডিও প্রকাশিত হয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে। এর কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। তবে পুলিশের প্রাথামিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
এফআইআরে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন দিক থেকে গুলি ছুড়তে থাকে এবং ইটের টুকরো নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখা যায়। এতে আরও বলা হয়, সহপাঠীরা সাঈদকে (২৩) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ক্যাম্পাস পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বিভূতি ভূষণ রায়ের লেখা এই এফআইআরে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত দুই থেকে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এফআইআরে আরও বলা হয়, রাষ্ট্র বিরোধী আন্দোলনরত দুর্বৃত্তগণ বিভিন্ন দিক থেকে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল ও তাদের কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাথাড়ি গুলি শুরু করে।
এফআইআরের বিষয়ে বিভূতি ভূষণ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি মাত্র মামলা দায়ের করেছি। তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য যাচাই করবেন।’
তবে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলছেন, নিজেদের দোষ ঢাকতেই বিক্ষোভকারীদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে পুলিশ। তাঁরা বলছেন, নিরস্ত্র আবু সাঈদকে সামনে থেকে গুলি করে হত্যা করলেও মামলায় আবু সাঈদকে গুলি করার কথা উল্লেখ করেনি পুলিশ। নাম প্রকাশ না করে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ মারা গেলেও এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সুস্পষ্ট মামলা হয়নি। উল্টো নিজেদের দোষ ঢেকে পুলিশ দায়ী করেছে আন্দোলনকারীদের।
আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকাশিত ভিডিও যাচাই করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অন্তত দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে তাকে লক্ষ্য করে ১২-গেজ শটগান থেকে সরাসরি গুলি ছোড়েন। সে সময় সাঈদ তার বুক চেপে ধরে এবং পুলিশ কর্মকর্তা কমপক্ষে আরও দুবার গুলি চালান। এ নিয়ে ১৭ জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে সাঈদ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ভৌগলিক অবস্থান শনাক্ত করে গত ১৭ জুলাই এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, গুলি চালানোর সময় তারা প্রায় ১৫ মিটার দূরত্বে ছিল। সাঈদ পুলিশের জন্য দৃশ্যত কোনো শারীরিক হুমকির কারণ ছিলেন না। সাঈদের ওপর পুলিশের হামলা ছিল বেপরোয়া ও বিনা উসকানিতে।