লক্ষ্মীপুরে ছাত্রদল সভাপতিসহ গুলিবিদ্ধ অর্ধশতাধিক, নিহত ১

নিহত ছাত্রদল কর্মী সজিব
নিহত ছাত্রদল কর্মী সজিব  © টিডিসি ফটো

লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ছাত্রদল কর্মী সজিব। সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিমসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও আহত হয়েছেন চার পুলিশ কর্মকর্তা। একই ঘটনায় ভাংচুর করা হয়েছে হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা। নিহত সজীব সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে, নিহতের বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানায়নি দলটি।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে লক্ষ্মীপুরের মদিন উল্যাহ হাউজিংয়ের একটি বাসার দোতলার সিঁড়ির পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

এর আগে বিকেলে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির নেতৃত্বে জেলা বিএনপির আয়োজনে পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেয় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

জেলা কৃষক দলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন ও সদর (পূর্ব) উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বাবু জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রথমে কলেজ রোড এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এরপর রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছুড়তে থাকে। এতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইব্রাহিম গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন।

সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন জানান, হাসপাতালে আহত অবস্থায় অনেক রোগী এসেছে। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধও রয়েছেন কয়েকজন। এছাড়াও হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, রক্তাক্ত এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

জেলা পুলিশের ডিআইওয়ান একেএম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, আমরা শহরের ব্রিজ এলাকায় ছিলাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে রয়েছি। আধুনিক হাসপালের সামনে কি হয়েছে তা জানি না।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান জানিয়েছেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের লোকজনের ওপর বিভিন্ন পয়েন্টে হামলা করেছে। পুলিশের গুলিতে ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় যুবদলের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন।

জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান  আশরাফ সদর হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যারিকেট ভেঙে আধুনিক হাসপাতালের সামনে দিয়ে হাইওয়ে সড়কে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় পুলিশের কর্মকর্তাসহ ৩০ জন সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪৫ মিনিট ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।


সর্বশেষ সংবাদ