টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

এশিয়ার মাটিতে ফাইনাল খেলছে অল ইন অস্ট্রেলিয়া

ফাইনালে আজ লড়াইয়ে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড
ফাইনালে আজ লড়াইয়ে নেমেছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড  © সংগৃহীত

নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ওশেনিয়া মহাদেশের দুই ক্রিকেট পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা থেকে শিরোপার লড়াইয়ে নেমেছে তারা।

তাসমান সাগরের দুই প্রান্তে অবস্থিত এ দেশ দুটির মধ্যে আকার-আয়তন, শক্তি ও জনসংখ্যার ফারাক যত বেশিই হোক না কেন, তা দেখে তাদের ক্রিকেটের স্বরূপ চেনা কঠিন। কিন্তু প্রতিবেশি দেশ দুটির ক্রিকেট ইতিহাসের ক্ষেত্রে ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’- এই প্রবাদ একেবারে মানানসই। বিশেষ করে বিশ্বকাপের মত আসরে দুই দলই চাইবে তাদের সেরাটা উজাড় করে দিয়ে খেলতে।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি হচ্ছে এশিয়ার মাটিতে- সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। চ্যাম্পিয়নের শিরোপা নতুন করে কার হাতে উঠবে তার জন্য অধীর আগ্রহে এখন অপেক্ষা করছে কোটি ভক্ত। ভক্তদের এত আগ্রহের কারণও যে আছে! কারণ, তাদের পছন্দের যে দলই জিতুক তাদের পক্ষে লেখা হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথম শিরোপা জয়ের সোনালী ইতিহাস। মজার দিক হলো, ২২ গজের আজকের খেলায় যে দলই জিতুক কাপ যাবে নিশ্চিত অস্ট্রেলিয়ায়।

অতীত ইতিহাস ও নানা সমীকরণে বরাবরের মতো অস্ট্রেলিয়াই যে এগিয়ে আছে এ নিয়ে কারো কোন তর্ক থাকার কথা না। উপরন্তু হাই ভোল্টেজ ম্যাচ ফাইনালে ইনজুরির কারণে কনওয়ের খেলতে না পারাটা ব্ল্যাক ক্যাপসদের জন্য নিশ্চিত অনেক বড় একটা ধাক্কা। তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিলে নিউজিল্যান্ড অন্তত একটি শিরোপা পাওয়ার দাবি নিশ্চয়ই রাখে।

অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছে মোট ১৪ বার। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া জয় পেয়েছে ৯টিতে, আর ৫টিতে জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়া এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ফাইনালের দেখা পেল। অপরদিকে নিউজিল্যান্ডের জন্য এটি প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার সুযোগ।

সমীকরণ যাই হোক কিউইদের বিরুদ্ধে জিততে হলে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার যে কোন বিকল্প নেই সেটিও আগাম জানিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। কোচের সঙ্গে অজি ক্যাপ্টেনও জানালেন আক্রমণাত্মক কৌশলে নিজেদের সেরাটা দিয়ে লড়াইয়ের কথা। নানা সমীকরণ কষে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপের জন্য এগিয়ে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিংও। তিনি জানিয়েছেন, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের সামর্থ্য রাখে অস্ট্রেলিয়া। 

অন্যদিকে টুর্নামেন্টের শুরু থেকে ফেভারিট না থাকলেও সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয় নিয়ে ফাইনালের ফেভারিট হয়েছে নিউজিল্যান্ডও। গেল কয়েক বছরে দলটি ক্রিকেটের সব সংস্করণের বড় আসরগুলোতে দুর্দান্ত খেলে আসছে। শুধু ২০১৫ সালের পর থেকেই সব সংস্করণ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪টি ফাইনাল খেলছে তারা।

অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন-আপের বিপক্ষে কিউইদের অসাধারণ বোলিং আক্রমণে উভয়ের লড়াইটা জমবে বলেই মনে হচ্ছে। 

তবে, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যেমন ক্রিকেটই খেলুক না কেন রোববারের ফাইনালে এশিয়ার দলগুলোর ভূমিকা হবে নীরব দর্শকের। তাই প্রিয় দলের খেলা দেখতে ফাইনালের টিকিট আগেই কেটে রাখা এশিয়ান দর্শকরা গ্যালারিতে বসে এবার কার জন্য হাততালি দেবেন এখন এটিই দেখার পালা।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


সর্বশেষ সংবাদ