রেকর্ড চারটি শিরোপা জিতেছেন কোচ সালাউদ্দিন, এবার বিপিএলে নেই কেন?
- টিডিসি স্পোর্টস
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ PM , আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৫ PM
ক্রিকেটাররা মাঠে খেলার লড়াই করেন, তাদের ভালো খেলার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয় জয়-পরাজয়। তবে মাঠের বাইরে থেকে যিনি খেলার প্রাণভোমরা, তিনি হলেন কোচ। যার ফলে খেলা শুধু ক্রিকেটারদের ব্যাট আর বলের লড়াই নয়, কোচদের কৌশল আর পরিকল্পনার লড়াইও। কোচদের কৌশলের লড়াই নতুন কিছু নয়। কিন্তু কৌশলের বাইরেও কোচদের আরও করণীয় আছে অনেক। যার ফলে হাই-প্রোফাইলের কোচদের কদরও বেশি।
বাংলাদেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ বিপিএল বরাবরই হাই প্রোফাইল কোচ দেখে এসেছে। টম মুডি, মাহেলা জয়াবর্ধনে, ল্যান্স ক্লুজনার, ওয়াকার ইউনিসের মতো কিংবদন্তি কোচরা অতীতে বিপিএলের বিভিন্ন দলে কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালে চিটাগাং কিংসের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাও। তবে তাদের কেউ নন, দেশি এক কোচই বিপিএলে সবচেয়ে সফল। তিনি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। তিনি বিপিএলে জিতেছেন রেকর্ড চারটি শিরোপা।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে কাজ করা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এখন পর্যন্ত জিতেছেন চারটি শিরোপা। যা বিপিএলের ইতিহাসে একজন কোচের হয়ে সর্বোচ্চ। তবে আসন্ন বিপিএলে অংশগ্রহণ করবে না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পাশাপাশি জাতীয় দলে সহকারী কোচের দায়িত্ব নেওয়ায় এবারের বিপিএলের বাইরে থাকবেন কোচ সালাউদ্দিন।
ডাগআউটের বাইরে থেকে এবার বিপিএল দেখবেন সফল কোচ সালাউদ্দিন , দেখবেন বিভিন্ন কোচের কৌশলের লড়াই। এবারের ৭ দলের তিনটির ডাগআউটে থাকবেন তিন বিদেশি কোচ। বাকি ৪ দলের হাল ধরছেন চার স্থানীয় কোচ।
রংপুর রাইডার্সের প্রধান কোচ হিসেবে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ মিকি আর্থার। কোচ হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিচিত এক নামই মিকি আর্থার। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা—এসব দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তার। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও তার অবদান কম নয়। সম্প্রতি গায়ানায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে দলকে শিরোপা এনে দিয়েছেন। এবার বিপিএলেও তার লক্ষ্য সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।
চিটাগাং কিংসের ডাগআউট এবার থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক গতি তারকা শন টেইট। কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করার পর থেকেই নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে চলেছেন অস্ট্রেলীয় এই কোচ। পাকিস্তান জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আগেও বিপিএলে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। পেসার হিসেবে ছিলেন আগ্রাসী মেজাজের। কোচ হিসেবেও তিনি যেমন কৌশলী, তেমনি আক্রমণাত্মক।
দুর্বার রাজশাহীর দায়িত্ব পেয়েছেন পাকিস্তানের আরেক অভিজ্ঞ কোচ ইজাজ আহমেদ। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৯ দলসহ বিভিন্ন পর্যায়ে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা তার। পাকিস্তানি এই কোচের আজই ঢাকায় এসে দুর্বার রাজশাহী দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা।
এবারের বিপিএলে দেশি কোচ থাকছেন কারা? ফরচুন বরিশালের দায়িত্বে আছেন মিজানুর রহমান, যিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে একজন সফল কোচ। আর ঢাকা ক্যাপিটালসের হাল ধরছেন অভিজ্ঞ খালেদ মাহমুদ সুজন। মিজানুর ও সুজনের রয়েছে বিপিএলের অতীত আসরে দলকে চ্যাম্পিয়ন করার অভিজ্ঞতা। শুধু কৌশল নয়, খেলোয়াড়দের চাঙা রাখা এবং প্রতিপক্ষের পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার ক্ষেত্রেও অতীতে নিজেদের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন তারা।
বিপিএলের সফলতম কোচ সালাউদ্দিনের ভাষায়, ‘বিপিএলের মতো বড় মঞ্চে কোচিং শুধু কৌশল তৈরি করাই নয়, খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে উজ্জীবিত রাখা, প্রতিপক্ষের কৌশল বিশ্লেষণ এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও থাকা জরুরি। বিদেশি কোচদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বেশি হলেও দেশি কোচরা ঘরোয়া পরিস্থিতির সঙ্গে বেশি মানানসই। বিদেশি ক্রিকেটারদের সঙ্গে নিজ দলের সেরা ক্রিকেটারের কম্বিনেশনটা ঠিক করাটাও তার জন্য বেশি সহজ। তাই এবারে বিপিএলে (কোচদের) লড়াই বেশ জমজমাট হবে।’
বিপিএলে মিকি আর্থার, শন টেইট কিংবা ইজাজ আহমেদের মতো অভিজ্ঞ বিদেশি কোচদের কৌশলগত লড়াইয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়াটাই হবে দেশি কোচদের বড় চ্যালেঞ্জ। তবে মিজানুর রহমান, বাবুল বা সুজনের মতো কোচরা জানেন, কীভাবে ঘরোয়া মাটিতে খেলোয়াড়দের থেকে সেরাটা বের করে আনতে হয়। সালাউদ্দিনের মতে, ‘দেশি কোচরা খেলোয়াড়দের মনের ভাষা বুঝতে পারেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত সমাধান দিতে পারেন, যা ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক বড় প্রভাব ফেলে।’