নতুন যেসব বিষয় পড়ানো হবে স্কুলে

 শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে সরকার
শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে সরকার  © সংগৃহীত

প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হবে না। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে হবে দুটি পাবলিক পরীক্ষা। পাশাপাশি নবম ও দশম শ্রেণিতে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা নামে তিন বিভাগ থাকবেনা। উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে সেটি নিধারিত হবে। পরিবর্তিত হচ্ছে কিছু বইয়ের নাম তবে পাঠ্য বিষয় একই থাকবে।

মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা প্রথম পাবলিক পরীক্ষা দিকে দশম শ্রেণিতে। এরপর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে একটি পাবলিক পরীক্ষার পরিবর্তে দুইটি অনুষ্ঠিত হবে। দুই পরীক্ষার ফল যোগ করে ঘোষণা করা হবে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ।

আরও পড়ুন: কচ্ছপ গতিতে চলছে রাবির ওয়াইফাই সেবা

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মোট আটটি এবং মাধ্যমিকে দশটি বিষয় পড়ানো হবে। এর মধ্যে প্রাথমিকের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও ধর্মশিক্ষার পাশাপাশি নতুন দুটি বিষয় হলো- ‘শিল্পকলা’, ‘শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা’ এবং মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, ধর্মশিক্ষা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার পাশাপাশি নতুন তিনটি বিষয় হলো জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শিল্প ও সংস্কৃতি।

এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে কয়েকটি নতুন বিষয় যেমন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তেমনি পুরোনো বিষয়গুলোকেও নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। কিছু বিষয়ের নাম পরিবর্তন হলেও পাঠ্য বিষয় একই থাকবে।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে তৃতীয় লিঙ্গের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৩

তিনি আরও বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে চারুকলা’ বইয়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’। এর ফলে এ বিষয়ে শিখন ক্ষেত্র অনেক বাড়বে। আগে যেমন এ বিষয়ে শুধু চারুকলাকে ফোকাস করা হতো, এখন চারুকলার পাশাপাশি নৃত্যকলা, নাট্যকলা, সংগীত ইত্যাদি বিষয় থেকে শিক্ষার্থী জানতে পারবে। বিষয়টি প্রাথমিকে থাকবে শিল্পকলা নামে এবং মাধ্যমিকে শিল্প ও সংস্কৃতি নামে।

বেশ কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকে যৌন শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির গুঞ্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, যৌন শিক্ষা বিষয়ক কোন পাঠ্যপুস্তক থাকবে না। তবে শিক্ষার্থীরা যেন প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে পারে, এ সম্পর্কিত অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রজনন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিষয়ে যেন শিক্ষার্থীরা সুস্পষ্ট ধারণা পায় এ জন্য “শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা” বিষয়ে প্রজনন স্বাস্থ্য নামে অধ্যায় থাকবে।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে

‘অন্যদিকে “জীবন ও জীবিকা” বিষয়টি হবে পেশাভিত্তিক। নবম ও দশম শ্রেণিতে এ বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী কৃষি, সেবা বা শিল্প খাতের একটি পেশায় দক্ষতা অর্জন করবে। সমন্বিত শিক্ষাক্রমে প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা পাঠ্যবই থাকবে। প্রত্যেক ধর্মের বইয়ে তিনটি শিখন ক্ষেত্র থাকবে। এগুলো হলো ধর্মীয় জ্ঞান, ধর্মীয় বিধিবিধান ও ধর্মীয় মূল্যবোধ। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবে।

আইসিটি নামে বইটির নাম দেয়া হয়েছে “ডিজিটাল প্রযুক্তি”। এর ব্যাপ্তি আরো অনেক বেশি বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আইসিটির প্রাথমিক জ্ঞান আহরণ করার পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সতর্কতা, অনলাইন ক্রাইম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নিয়মকানুন ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবে।’


সর্বশেষ সংবাদ