কবে বেতন পাবেন প্রতিবন্ধী বিউটি
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:১৮ AM , আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৩২ AM
এমপিওভুক্ত না হওয়ায় দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বিনাবেতনে শিক্ষকতা করে আসছেন বগুড়ার জেলার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা প্রতিবন্ধী কোহিনুর আখতার বিউটি। দীর্ঘদিন থেকে বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তিনি।
জানা যায়, প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মানো বিউটির দুটি পায়ের হাঁটু নড়াচড়া করতে না পারায় (ফিক্সড হওয়ায়) লাঠিতে ভর করে হেলেদুলে চলতে হয়। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হলেও তার অদম্য মেধা শক্তি দিয়ে ১৯৮৬ সালে এসএসসি, ১৯৮৯ সালে এইচএসসি ও ১৯৯৪ সালে ডিগ্রি পাস করেন। এরপর কোথাও চাকরির চেষ্টা না করে ১৯৯৫ সালে ওই বিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে এমপিওর আশায় বিনা বেতনে পাঠদান করে যাচ্ছেন।
২০০২ সালে প্রাথমিকভাবে বিদ্যালয়টি ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত করা হলে ৬ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারী বেতনভাতা পেয়ে থাকেন। কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণিতে এমপিও না হওয়ায় বেতনভুক্ত হননি বিউটির। নবম ও দশম শ্রেণিতে এমপিও না হওয়ার কারণে বিউটিসহ তিনজন শিক্ষক ও ১ জন নৈশপ্রহরী দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর যাবৎ বিনাবেতনে চাকরি করে আসছেন। ফলে তারাও পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। অথচ বিনাবেতনে চাকরি করলেও তাদের প্রচেষ্টায় ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ২৯ জন অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ জন সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে।
প্রতিবন্ধী শিক্ষিকা কোহিনুর আখতার বিউটি আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ বিনাবেতনে পাঠদান করে আসছি। আর কতদিন বিনাবেতনে পাঠদান করাতে হবে তা আমার জানা নেই। তবে প্রতিবছর এসএসসির ফলাফল অত্যন্ত ভালো হওয়া সত্ত্বেও কেন নবম-দশম শ্রেণিতে এমপিও হলো না এটা ভাবতে অবাক লাগে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ছাতিয়ানগ্রামে নারী শিক্ষার একমাত্র বিদ্যাপীঠে ২৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ৭ কক্ষ বিশিষ্ট বিদ্যালয়ে ৩ কক্ষ আধা পাকা ও ৪ কক্ষ কাঁচা রয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুম এলে এসব কক্ষে টিনের চালা দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে। এতে ক্লাসে নেয়ায় বিঘ্ন ঘটে।
আদমদীঘি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুল হোসেন জানান, বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের জন্য টেন্ডার হয়েছে। শিগগিরই বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া নবম-দশম শ্রেণিতে এমপিও করার জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় অচিরেই বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হবে