পরীক্ষা বাতিল হলেও বছরে দুই সময়ে মূল্যায়ন হবে মাধ্যমিকের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫২ AM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৩৯ AM
নতুন শিক্ষাক্রমে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত আর থাকছে না অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা। পরীক্ষার পরিবর্তে আগামী বছর (২০২৪ সাল) থেকে এই চার শ্রেণিতে দুটি সামষ্টিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন নেয়া হবে বছরের মাঝামাঝি আর বছর শেষে নেয়া হবে বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, পরীক্ষার পরিবর্তে নেওয়া মূল্যায়নের ফলাফলও প্রকাশ করতে হবে নির্দিষ্ট সময়েই। এখন থেকে প্রশ্ন ব্যাংক কিংবা অন্য কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্ন কেনার সুযোগও বন্ধ করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এসব নির্দেশনা প্রত্যেক স্কুলকে শতভাগ পালন করতে হবে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে শিক্ষাপঞ্জি (অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার) প্রকাশ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৪ সালে মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর নতুন শিক্ষাক্রমের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ও প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে মে মাসে। ২৩ মে থেকে মূল্যায়ন শুরু হয়ে চলবে ৯ জুন পর্যন্ত। ১০ জুলাই ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ও প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে হবে।
মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রমের বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন শুরু হবে ২১ নভেম্বর থেকে। ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন চলবে। মূল্যায়নের ফল প্রকাশ হবে ৩০ ডিসেম্বর।
অন্যদিকে ২০২৪ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়েও প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান করা হবে। এ তিন শ্রেণিতেও কোনো পরীক্ষা থাকবে না। শুধু চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৫ সাল থেকে সেটাও বাতিল হবে। ওই বছর থেকে চতুর্থ-পঞ্চমে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। ফলে অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে থাকছে না অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, এ সূচি অনুযায়ী ষাণ্মাসিক ও বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়নের আয়োজন করতে হবে। মূল্যায়নের কাগজপত্র অন্তত এক বছর সংরক্ষণ করতে হবে স্কুলে। মূল্যায়নের তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে পরিবর্তন করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অনুমতি নিতে হবে। মূল্যায়নের প্রশ্ন শিক্ষকদের নিজেদের প্রণয়ন করতে হবে। কোনো উৎস থেকে সংগৃহীত প্রশ্নে মূল্যায়ন করা যাবে না।
এদিকে, নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অভিন্ন বিষয়ে লেখাপড়ার বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ফলে আগামী বছর থেকে নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার বিভাগ বিভাজনও আর থাকছে না।
চলতি বছরে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠদান চলছে। আগামী জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। ফলে এতদিন ধরে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার যে বিভাগ বিভাজন শুরু হত, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে তা আর থাকছে না।
এদিকে, আজ রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে ৮ম ও ৯ম শ্রেণির শিক্ষকদের নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী সাত দিনব্যাপী চলবে এ কার্যক্রম।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ডিসেমিনেশন অফ নিউ কারিকুলাম স্কিম পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আলী জানিয়েছেন, সারা দেশে উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও ক্ষেত্র বিশেষে শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি শিক্ষকদের এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, প্রয়োজনে একাধিক ধাপে দেশব্যাপী ৪৭৭টি থানা বা উপজেলায় ৫০৮টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ব্যয়কেন্দ্র, প্রশিক্ষণার্থীর সংখা, কক্ষ বিন্যাস, উপজেলা ক্লাস্টার ও খসড়া বাজেটের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ১৭-৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সুবিধাজনক সময়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। ২৫ ডিসেম্বর বড় দিনের ছুটি থাকায় সেদিন এই কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।