ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপে পড়ার সুযোগ

ইউরোপের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও জনপ্রিয় স্কলারশিপ ইচ্ছে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২ হাজার ৪৫০ জন শিক্ষার্থী এ স্কলারশিপের অধীনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পড়ালেখা করতে পারবেন। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা যে কয়টি মর্যাদাপূর্ণ স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে মাস্টার্স করতে যান, ইরাসমাস মুন্ডাস মাস্টার্স স্কলারশিপ তার মধ্যে অন্যতম।

সর্বশেষ শিক্ষাবর্ষেও বাংলাদেশ থেকে ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপ নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পড়াশোনা করছেন। ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপের পুরো প্যাকেজ বেশ আকর্ষণীয়। প্রোগ্রাম চলাকালে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করা হবে, তার টিউশন ফি সম্পূর্ণ মওকুফ। এছাড়াও প্রতিমাসে ১১০০-১২০০ ইউরো বৃত্তি দেয়া হয়।

এছাড়া স্বাস্থ্য ও জীবন বীমা, ট্রাভেল অ্যালায়েন্স, এয়ারফেয়ারেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

আবেদন প্রক্রিয়া:
কাজের ক্ষেত্রে ইরাসমাস মুন্ডুস এতোটাই প্রফেশনাল, তারা প্রত্যেকটি প্রোগ্রামের ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইট খুলে রেখেছেন। যেন আবেদনকারীরা প্রত্যেকটি প্রোগ্রামের নিজস্ব ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারেন। কারা কারা আবেদন করতে পারবেন সেই সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য, আবেদনকারীর ন্যূনতম যোগ্যতা, আবেদন করার সময়সূচী, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সবকিছুর বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া থাকে প্রত্যেকটি প্রোগ্রামের নিজস্ব ওয়েবসাইটে।

ইরাসমাসমুন্ড স্কলারশিপে আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে আইইলটিএস-এ উপযুক্ত স্কোর করতে হবে। তবে কারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি ইংরেজি মাধ্যমের হয়ে থাকে তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠারে মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন পত্র দিয়ে আবেদন করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিভাগে ইমেইল করে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।

অনলাইনের মাধ্যমে এই স্কলারশিপের বেশির ভাগ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে হয়। ভাল খবর হল- অনলাইনে আবেদন করতে হলেও আবেদন করার জন্য কোনো প্রকার টাকা খরচ করতে হয় না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে অনলাইন ফর্মের নির্ধারিত স্থানে আপলোড করতে হয়। এছাড়া কেউ চাইলে ইমেইল করেও প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস পাঠাতে পারবেন।

মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদনের ক্ষেত্রে সর্বশেষ আপনি যে বিষয়ে পড়েছেন তার সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, জীবনবৃত্তান্ত, ইংরেজি ভাষাশিক্ষার স্কোর, শিক্ষার্থীর কাঙ্খিত পড়ালেখা সম্পর্কিত মোটিভেশন লেটার ও শিক্ষার্থী সম্পর্কে যথাযথ ধারণা রাখেন এমন দুজন যোগ্য ব্যক্তির সুপারিশপত্র (রিকমেন্ডেশন লেটার) দিয়ে আবেদন করতে হয়। দেশি বিদেশি জার্নালে আপনার প্রকাশিত গবেষণাপত্র যদি থাকে তাহলে তা জমা দিলে অনেক এগিয়ে থাকবেন আপনি।

যেই প্রোগ্রামে পড়ালেখা করতে আগ্রহী সেই প্রোগ্রামের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা কিংবা এ সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কো-কারিকুলার কার্যক্রম আবেদন প্রক্রিয়ায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজস্ব প্রস্তাবিত গবেষণা কাজ জমা দিতে হয়। একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ তিনটি প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন।

জেনে রাখুন

১। ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপের জন্য জীবন বৃত্তান্তের ক্ষেত্রে (Curriculum Vitae) ইউরোপাস ফরমেট ব্যবহার করাটা সুবিধাজনক।

২। একশন-১ এর অধীনে আবেদন করার জন্য সঠিক সময় হচ্ছে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস।

৩। মোটিভেশনাল লেটারকে ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মোটিভেশনাল লেটার ২/৩ পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ভাল। এ লেটার শিক্ষার্থীকে তার একাডেমিক বা প্রফেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড, অভিজ্ঞতা, কেন সে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামে আবেদন করতে আগ্রহী, ওই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করলে নিজের দেশ বা প্রতিষ্ঠান কিভাবে উপকৃত হবে এবং ভবিষ্যৎ গবেষণার লক্ষ্য-সংকল্প করতে হয়।


সর্বশেষ সংবাদ