টিউশন ফি ছাড়াই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ যে ৫ দেশে

টিউশন ফি ছাড়াই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ যে ৫ দেশে
টিউশন ফি ছাড়াই বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ যে ৫ দেশে  © সংগৃহীত

উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বর্তমানে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী নিজ দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। শিক্ষার গুণগত মান ও উন্নত জীবনযাপনের কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর প্রথম পছন্দ থাকে ইউরোপের দেশগুলো। কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে বিদেশে উচ্চশিক্ষার এই স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। কেননা ইউরোপে উচ্চশিক্ষায় টিউশন ফি বাবদ গুনতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা।

এর ফলে দেখা যায় সাধ থাকলেও  অনেকের সাধ্য হয় না ইউরোপে পড়তে যাওয়ার। তবে আবার শিক্ষাব্যবস্থা মান বিবেচনায় এবং খরচের হিসাব মিললেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান অনেকেই। 

বিশ্বে এমন কিছু দেশ আছে, যেসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয় বিনা খরচে পড়ার সুযোগ রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু দেশ সম্পর্কে-

(১) জার্মানি
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দ জার্মানি। সে দেশের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় খরচে চলে। অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দেশ জার্মানি। দেশটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। দেশটির অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু প্রশাসনিক ফি নেয়, কিন্তু কোনো টিউশন ফি নেয় না।  কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রামে টিউশন ফি থাকলেও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খরচ বলতে আছে সেমিস্টার কন্ট্রিবিউশন ফি। এর সঙ্গে টিউশন ফির সম্পর্ক নেই। এটি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে পাবলিক পরিবহন, ক্রীড়া, অনুষদ/বিভাগীয় ছাত্র সংগঠন ও প্রশাসনিক ফির খরচ বহন করে। 

সাধারণত জার্মানিতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একজন বিদেশি শিক্ষার্থীর সেমিস্টার প্রতি ৩১৫ থেকে ৫৩০ ডলার খরচ হবে। প্রতি মাসে থাকা-খাওয়ার অর্থাৎ জীবনযাত্রার ব্যয় পড়বে ৯৫০ ডলারের মতো। স্নাতক করার পর ১৮ মাসের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ওয়ার্ক ভিসা মেলে এখানে। 

(২) চেক প্রজাতন্ত্র
ইউরোপের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি ছাড়াই পড়াশোনা করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে কিছু শর্ত মানতে হয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের। তাদের চেক ভাষায় কথা বলতে জানতে হবে বা চেক প্রজাতন্ত্রের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিগ্রির জন্য ভর্তি হতে হবে।

(৩) নরওয়ে
এ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি মুক্ত রেখেছে। প্রতি সেমিস্টারে শুধুমাত্র শিক্ষার্থী ইউনিয়ন ফি দিতে হয়, যা ৩০ থেকে ৬০ ইউরোর (প্রায় ২ হাজার ৮৯০ থেকে ৫ হাজার ৭৮০ টাকা) মধ্যে। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ নরওয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হন, তাদের কোনো টিউশন ফি লাগে না। নামমাত্র প্রশাসনিক ফি দিয়েই পড়াশোনা করতে পারবেন দেশটিতে। তবে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত নয় এমন দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের থেকে টিউশন ফি নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। কোনো কোনো বিষয়ের খরচ সে ক্ষেত্রে ১৩ হাজার ডলারের মতো পড়তে পারে। এখানে মাসিক জীবনযাত্রার ব্যয় ৭৩৫ থেকে ৯৫০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।

নরওয়েতে শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ প্রদান করা হয়। স্নাতক শেষের পর এক বছরের ওয়ার্ক ভিসা বা কাজের ভিসা পান। 

আরও পড়ুন: বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কিভাবে এবং কোথায় করবেন সার্টিফিকেট এটাস্টেশন

(৪) সুইডেন
সুইডেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এলাকায় মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কোনো টিউশন ফি দিতে হয় না। এছাড়া সুইডেনে বিদেশি সব শিক্ষার্থী বিনা ফিতে পিএইচডি করতে পারেন।

(৫) আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনার অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে কোনো টিউশন ফি দিতে হয় না। বিদেশি শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারেন। তবে বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার ডলার। অপরদিকে মাসিক জীবনযাত্রার খরচ ৩৫০ ডলারের আশপাশে।

 

সর্বশেষ সংবাদ