পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নামে ঢাবির অফিসিয়াল পেজ

‘নেই মামার চেয়ে, কানা মামা ভালো’— বলছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা

সেই পেজটি
সেই পেজটি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা সংক্রান্ত নানান তথ্য জানাতে সম্প্রতি একটি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস। তবে এই পেজটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাহালুল হক চৌধুরী’। যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন। 

পেজটির নাম নামকরণ নিয়ে শুরুর দিকে সমালোচনা করলেও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বলছেন, পরীক্ষা সংক্রান্ত নানান তথ্য জানাতে এরকম একটি ফেসবুক পেজ দরকার। তাই নামকরণ যেটিই হোক না কেন তাদের কাছে সেটি এখন ‘নেই মামার চেয়ে, কানা মামা’র মতোই।

তথ্য মতে, রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের পরীক্ষা ও ফলাফলসহ নানা সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হলেও কার্যকর করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব করতে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে আলাদা ‘ডেডিকেটেড ডেস্ক’ চালু করার আশ্বাস দিলেও আজও কার্যকর করা হয়নি। সমস্যা সমাধানে সবসময় নীলক্ষেত মোড়ে আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। এরপরেই মিলে সাত কলেজের সমস্যার সমাধান। 

সাত কলেজের পরীক্ষা নেওয়া ও সার্টিফিকেট প্রদান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। একাডেমিক কার্যক্রমে নজর না দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা জানতে পারছে না ঢাবি প্রশাসন। 

এদিকে, গত ২৪ এপ্রিল অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা সংক্রান্ত নানান তথ্য জানাতে ‘বাহালুল হক চৌধুরী’ নামে একটি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ চালু করা হয়। ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের নামে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ চালু করা নিয়ে শুরুতে সমালোচনা থাকলেও সময়ের সাথে সাথে ইতিবাচক হিসেবেও নিচ্ছেন অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। কারণ একদম না থাকার চেয়ে কিছু একটা থাকা ভালো। 

‘বাহালুল হক চৌধুরী’ নামে ফেসবুক পেজটির কমেন্টসের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান এসেছে দ্রুত সময়ের মধ্যেই। এমন সিদ্ধান্তের কারণেই পেজটির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে কয়েকগুণ। ইতিমধ্যেই গত এক সাপ্তাহে পেজটিতে ৩৮ হাজারে ফলোয়ারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে। 

আরও পড়ুন: ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজন প্রকাশ

পেজটিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল অধিভুক্ত সরকারি সাতটি কলেজে নিয়মিত ক্লাস না হওয়া। অভিযোগ পেয়েই প্রত্যেক কলেজ থেকে ক্লাস রুটিন সংগ্রহ ও  ক্লাস রুটিন অনুযায়ী ক্লাস হচ্ছে কিনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনিটরিং করার ঘোষণাও আসে। এছাড়াও প্রত্যেক কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদের এটেন্ডেন্টস শীট সংগ্রহ ও ইনকোর্স পরীক্ষার খাতা সংগ্রহসহ শিক্ষার্থীদের কল্যাণার্থে আরো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও পেজটিতে বলা হয়।  

ঈদের পরে প্রত্যেকটি কলেজে যাওয়ার চেষ্টা ও কলেজ অধ্যক্ষদের সাথে কথা বলে কিভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানো যায়, শিক্ষক সংকটসহ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা এবং প্রতিবন্ধকতাগুলো কিভাবে দূর করা জন্য কাজ করবেন বলেও জানান ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী। 

গত এক সাপ্তাহে সাত কলেজের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে‘বাহালুল হক চৌধুরী’নামে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটিতে শিক্ষার্থীদের কৃতজ্ঞতার ঝড় বইছে। 

তুষার হোসেন রনি নামে এক শিক্ষার্থী বলেছেন, ধন্যবাদ স্যার। আপনার এই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে মনে হচ্ছে আমাদের পরিবর্তন ও ভবিষ্যতে কিছু করার আশা করতে পারি। 

শানজিদ হাসান নামে আরও এক শিক্ষার্থী বলেছেন, ধন্যবাদ স্যার, আপনি ভালো একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে করে আমাদের অনেক উপকার হবে এবং আমরা আরও ক্লাসে মনোযোগী হতে পারবো। একেই সাথে আমাদের পড়াশোনা আরও ভালো হবে।

বাঙলা কলেজ শিক্ষার্থী মকিবুল ইসলাম সিয়াম বলেন, এতদিন সমস্যার কথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বলার জায়গা ছিল না। কোনো কিছু নিয়ে সমস্যা হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলে ঢাবিতে যেতে। আবার ঢাবিতে গেলে ঢাবি কর্তৃপক্ষ বলে এটা তোমাদের কলেজের কাজ। তবে‘বাহালুল হক চৌধুরী’নামে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটিতে শিক্ষার্থীদের কমেন্টস আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে। নিশ্চই স্যার এই কাজ সাত কলেজকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। বাহালুল স্যার এ পর্যন্ত যেসব সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন হলে নিঃসন্দেহে সাত কলেজ এগিয়ে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ