ইবিতে চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ, ক্ষতিপূরণ দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) খালেদা জিয়া হলে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়ন। রবিবার (০৮ আগস্ট) এক সংবাদ বিবৃতিতে চুরির ঘটনার তদন্ত, ক্ষতিপূরণ, মালামাল উদ্ধার এবং জড়িতদের বিচার দাবি করা হয়েছে।

বিবৃতিতে সংগঠনটির শাখা সভাপতি নূরুন্নবী সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক জি কে সাদিক ক্যাম্পাসে একের পর এক চুরির ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয় দাবি করে বলেন, ক্যাম্পাসে এসব চুরির ঘটনা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করছে। এসব ঘটনা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার ত্রুটি ও প্রশাসনের ব্যর্থতা স্পষ্ট করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তিন দফা দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ক্যাম্পাসে আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনে চুরির ঘটনা মানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ যথেষ্ট নিরাপদ নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি জানাচ্ছি।

এক. শিক্ষার্থী শূন্য ক্যাম্পাসে হল ও একাডেমিক ভবনগুলোর পাশে উচু টাওয়ার নির্মাণ করে বাড়তি প্রহরী নিযুক্ত করতে হবে এবং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্থাপনকৃত সিসি ক্যামেরাগুলো সচল ও ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। দুই. চুরি যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুরন দিতে হবে। তিন. এসব ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

পড়ুন: ইবির খালেদা জিয়া হলের ৯ কক্ষে চুরি

এছাড়া একের পর এক চুরির ঘটনায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তারাও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হায়াত-ই-জান্নাত বলেন, আসলে হলে চুরির ব্যাপারে কেউ এমন আশা করেনি যে, হল বন্ধের এতো দিন পরে এমন কিছু হবে।

তিনি বলেন, হঠাৎ করে ক্যাম্পাস বন্ধে বাসায় গেছে সবাই। অনেকেই দূরে বাসা এজন্য অনেক দামী এবং প্রয়োজনীয় জিনিস হল থেকে নিয়ে যেতে পারেনি। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার আমাদের সবার জন্য। আমরা সবাই আশা করছি হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির সুষ্ঠ তদন্ত করবেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জনান, কবেনাগাদ চুরি হইছে সেটাও আমাদের জানাতে পারে নাই হল প্রশাসন। আর চোর শনাক্ত করার কোনো উপায় হবে কি না সেটা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ হলের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো অনেকদিন যাবত বন্ধ।

আবাসিক শিক্ষার্থী সুরাইয়া পারভীন বলেন, বাসা দূরে হওয়ায় একদিনে গিয়ে থাকার জায়গার অভাবে জিনিসগুলো হল থেকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। অনেকে ভাবতে পারে হল এ আবার কি এমন জিনিস রাখা আছে? আমার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র হলে রাখা আছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রশাসন অনেক বেশি উদাসীন। সেটা হল চুরি ঘটনা থেকে আরো বেশি স্পষ্ট।

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জুলি আক্তার বলেন, গতকাল খালেদা জিয়া হলের চুরির যে ঘটনাটি ঘটেছে খুবই হতাশাজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। নিরাপত্তার প্রশ্নটি বার বার মনকে নাড়া দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যারা হলে থাকি সেখানে নিজেদের বাড়ি এবং নিরাপত্তার জায়গা হিসেবেই মনে করি। বার বার চুরি হওয়ার ঘটনায় আমরা খুবই চিন্তিত।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি এসব ঘটনার জড়িতদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা যাতে পরবর্তীতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মহবুবর রহমান বলেন, করোনার মধ্যে এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা পরিদর্শন করে দেখেছি। আইনগত যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার সেটি প্রক্রিয়াধীন আছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। যাতে আগামীতে আরও সতর্ক থাকা যায়।


সর্বশেষ সংবাদ