বেরোবি উপাচার্যের মেয়াদ নিয়ে ধোঁয়াশা, চলছে বিতর্ক

বেরোবি ক্যাম্পাস ও ভিসি ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ
বেরোবি ক্যাম্পাস ও ভিসি ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ   © ফাইল ছবি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মেয়াদ নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর মেয়াদ কি ১ জুন শেষ নাকি ১৩ জুন এ নিয়ে ক্যাম্পাস এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানান বিতর্ক।

জানা যায়, উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ২০১৭ সালের ১৪ জুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এর আগে ১ জুন ২০১৭ তার নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সময় তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর উপ-উপাচার্য ছিলেন। সেখান থেকে ১২ জুন তিনি পদত্যাগ করেন এবং ১৩ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর ১৪ জুন তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।

তবে, এখন প্রজ্ঞাপন জারির দিনই কি তাঁর মেয়াদকাল পূর্ণ হবে নাকি যোগদানের দিন? এনিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সংশ্লীষ্টদের মাঝে কৌতুহলের শেষ নেই। এদিকে, আজ ১ জুন উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হবে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন অনেকেই। অনেকে আবার বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘কলিমউল্লাহ মুক্ত ক্যাম্পাস ‘ হিসেবেও ঘোষণা দিয়ে আসছে। তবে বিষয়টিকে হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, ১জুন উপাচার্য বিইউপিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেখান থেকে ১২ জুন পদত্যাগ করেন এবং ১৩ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক দিনের জন্য যোগদান করেন। এরপর ১৪ জুন বেরোবিতে যোগদান করেন। একই সাথে একজন মানুষ দুই জায়গায় যোগদান করে থাকতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেন তারা। তবে যারা আজ থেকেই মেয়াদ শেষ বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা ট্রোল করার জন্যই করছেন এর বেশি কিছুই না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষ্ক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, ‘ ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে নিয়োগের যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছিল সেটা ছিল ১ জুন। প্রজ্ঞাপনে তো সেভাবে বলা থাকেনা আর বলা নাইও। বলা আছে এই নিয়োগ অবিলম্বে কার্যকর হবে। উপাচার্য যেদিন যোগদান করেছেন সেদিন থেকেই তার মেয়াদকাল শুরু হবে বলেই তিনি (উপাচার্য) ধরেছেন। কিন্তু আমরা অন্য জায়গায় খবর নিয়ে দেখলাম যেদিন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় সেদিন থেকেই চারবছর গণনা করা হয়। এরমানে গতকালই তাঁর চারবছর পূর্তি হয়ে গেছে। এখানে উনার তো সেভাবে যোগদান করার কিছুই নাই।’ প্রজ্ঞাপন জারি হলেই তার মেয়াদকাল সেদিন থেকেই জারি হবে এবং তিনি যে দিনই যোগদান করুক না কেন। তিনি এটাকেই অধিকার সুরক্ষা পরিষদের ব্যাখ্যা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের অধিকার সুরক্ষা পরিষদের মিটিং আছে সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক একটা বিবৃতি আমরা দেব। যেহেতু উনি (উপাচার্য) ক্যাম্পাসে নাই তাই আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘কলিমউল্লাহ মুক্ত ক্যাম্পাস ‘ ঘোষণা করব। উপাচার্য যদি আজকের পর দায়িত্বে থাকেন এবং যা করবেন সেটা অবৈধ হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘মেয়াদকাল নিয়ে যে ধোঁয়াশা চলছে এটার জাস্টিস হচ্ছে এখানে দুটো জিনিস আছে। সেটা হলো যদি নিয়োগের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি দেশের মধ্যেই থাকে তাহলে সেটা পরেরদিন থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা। যে তারিখে তার প্রজ্ঞাপন হয়েছে তার পরের দিন থেকেই যোগদান করে ইমপ্লাই হবে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে থাকলে তিনি তার ছুটি শেষে যেদিন এসে যোগদান করবেন সেদিন থেকেই হিসাব হবে। নিয়ম যেটা যোগদান করার এ ক্ষেত্রে তিনি কি করেছেন সেটা আমার জানা নাই।’

রিলেটেড সংবাদ: 

দুর্নীতির তদন্ত স্থগিত চেয়ে বেরোবি ভিসির রিট

সশরীরে পরীক্ষা নিতে ইউজিসির অনুমোদন, যা ভাবছে বেরোবি প্রশাসন

বেরোবি ‘স্টুডেন্ট রাইটস ফোরাম’র আত্মপ্রকাশ


সর্বশেষ সংবাদ