দু’বছরে মাত্র ১৬০ দিন উপস্থিত বেরোবির উপাচার্য!

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) যোগ দেওয়ার পর থেকে উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে নিয়মিত ক্যাম্পাসে না আসার অভিযোগ উঠেছে। তিনি বেশির ভাগ সময় অনুপস্থিত থাকায় ভোগান্তির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যেকোন জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায় গিয়ে কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিতে হয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধীক শিক্ষার্থী।

বেরোবি শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘উপাচার্য কলিমউল্লাহ ২০১৭ সালের ১ জুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ দেওয়ার পর থেকে ৬২৫ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র ১৬০ দিন ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। এই হিসেবে তিনি ৪৬৫ দিন ক্যাম্পাসে যাননি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, উপাচার্য দিনের পর দিন ক্যাম্পাসে না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। উপাচার্যের এমন খামখেয়ালি মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসার জন্য শিক্ষার্থীরা আহবান জানিয়েছেন।

অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘উপাচার্য নিয়মিত ক্যাম্পাসে থাকেন না সে বিষয়টি সবার জানা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত শিক্ষক-কর্মচারীরা জানান, বিশেষ কারণ ছাড়া ক্যাম্পাসে আসেন না উপাচার্য। সাধারণত সভা-সেমিনারের উদ্বোধন ও পরিচয়পত্র বিতরণসহ কিছু জাতীয় কর্মসূচিতে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি।

উপাচার্যের দপ্তর জানিয়েছে, উপাচার্য কলিমউল্লাহ একাধিক বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব ধরে রেখেছেন। এছাড়া, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জরুরি প্রয়োজনে বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিতে অনেক শিক্ষার্থীকে ঢাকায় যেতে হয়েছে।

উপাচার্য কলিমউল্লাহ যোগ দেওয়ার পর অধিকাংশ সিন্ডিকেট সভা, শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড, কর্মকর্তা নিয়োগ বোর্ড ও কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী জানিয়েছেন। আরো অভিযোগ রয়েছে, এই উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ব্যাপক রদবদল করেছেন এবং অনেককেই দুই থেকে চারটি পর্যন্ত প্রশাসনিক পদে বসিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক গাজী মাজহারুল আনোয়ার জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা বিষয়টি প্রত্যক্ষ করছি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। আমরা রেজুলেশন আকারে বিষয়টি পেশ করব।’

উপাচার্য বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জনসংযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘উপাচার্য রোববার ঢাকায় গেছেন। দুই দিনের প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামের কারণে ঢাকায় থাকতে হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে উপাচার্য কলিমউল্লাহর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোনে সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ