গুচ্ছ ইস্যুতে ইবি প্রশাসনের আলোচনা বিফল, শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)  © সংগৃহীত

গুচ্ছ ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সাথে দিনব্যাপী আলোচনা করেও ২০২৪-২৫ বর্ষের ভর্তিতে গুচ্ছে থাকা বা না থাকার বিষয়ে কোনো সমাধানে উপনীত হতে পারেনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। আলোচনা শেষে আগামী এক সপ্তাহ পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

রবিবার (৫ ডিসেম্বর) গুচ্ছ ইস্যু নিয়ে শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র আন্দোলন, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান। 

আলোচনায় গুচ্ছে থাকা না থাকার বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধা তুলে ধরেন কর্তৃপক্ষ। এসময় ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির জন্য জোর দাবি জানায়। 

ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, আমরা গুচ্ছ থেকে বের হতে চাই। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্রতা ফিরে আসুক। যেহেতু সময় কম, তাই এই বছর যদি গুচ্ছে যেতেই হয় তবে বের হয়ে যাওয়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এর আওতায় ফেরাতে হবে। তারা যদি না ফিরে তবে আমরা গুচ্ছে যাওয়ার পক্ষে নই। আর পরেরবার থেকে ইবি যেন কোনক্রমেই গুচ্ছে অংশ না নেয় সেই দাবি ভিসির কাছে জানিয়ে এসেছি।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সভায় কোন ছাত্র সংগঠনই গুচ্ছে থাকার পক্ষে মত দেয়নি। সকল ছাত্র সংগঠন চেয়েছে ইবিতে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হোক। আমরা শুরু থেকেই গুচ্ছের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্মারকলিপি সহ বিভিন্ন কার্যক্রম করেছি। আমরা চাই, ইবিতে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হোক। তবে আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ থেকে বের হতে কোন প্রেশার  দিইনি। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং রাষ্ট্রের বিষয়। তাদের উভয়ের মতামতের ভিত্তিতে যেটা শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণকর হয় তারা সেই সিদ্ধান্ত নিবে বলে আশা করছি। এছাড়া যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হয় তাহলে দুইমাসের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছি।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের ঝামেলা সৃষ্টি হোক সেটা আমরা চাইনা। একইসঙ্গে মন্ত্রনালয় থেকে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের বাজেট থেকে বঞ্চিত না হই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। গুচ্ছ থেকে বের হলে আামাদের উন্নয়ন কাজ ব্যহত হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গুচ্ছ থেকে বের হতে সকল ছাত্র সংগঠন এরআগেও আমাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। এখন আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতামত নিয়েছি। সামনে সকল ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিদের মতামত নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া গুচ্ছ থেকে যারা বের হয়ে গেছে মন্ত্রনালয় থেকে তাদেরকে আবারও গুচ্ছে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। যদি তারা আবারও গুচ্ছে ফিরে আসে তাহলে আমরাও গুচ্ছে থাকবো। আর যদি তারা স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয় তাহলে আমরাও গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাবো।

উল্লেখ্য, গত শনিবার আসন্ন ২০২৪-২৫ বর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তির দাবিতে প্রশাসন ভবনে প্রায় দেড় ঘন্টা তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। পরে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ