নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বুটেক্সে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বুটেক্স
জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বুটেক্স  © টিডিসি ফটো

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপিত হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আন্তঃহল ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, সকল হলে শহিদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া-মোনাজাতসহ নানা কর্মসূচিতে বুটেক্সে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করা হয়েছে। 

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের দিন সকাল ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। এ সময় উপস্থিত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা শহিদদের স্মরণে নিজেদের বক্তব্য রাখেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: জুলহাস উদ্দিন বলেন, আমি প্রথমেই ৩০ লাখ শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আর জুলাই বিপ্লবে যারা আত্মত্যাগ করেছে বা শহিদ হয়েছে তাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। তাছাড়া আমরা বৈষম্যহীন প্রতিষ্ঠান ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলবো। এটা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে যে অবস্থানে আমরা আছি সেখান থেকে আমরা নিজের কাজ করবো ও দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করব। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে আমরা একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলবো। আমি এই বিজয়ের দিনে বলতে চাই আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে আমাদের অনেক প্রত্যাশা আছে এবং সেই প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যেতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আজ বিজয় দিবসে সকল শহিদদের স্মরণ করছি ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। সত্যিকার অর্থে আমরা প্রথম বিজয়ের পর দ্বিতীয় বিজয় উদ্‌যাপন করছি। ১৯৭১ সালে বিজয় অর্জন করতে পারলেও সত্যিকার অর্থে আমরা স্বাধীনতা পায়নি। জুলাই বিপ্লবের পর এটা আমাদের দ্বিতীয় বিজয় ও দ্বিতীয় স্বাধীনতা। স্বাধীনতা মানে শুধু দেশকে স্বাধীন করা না বরং অর্থনীতি, শিক্ষা সহ আমাদের সবদিক থেকে স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে। আমাদের সত্যিকার অর্থে বিজয় লাভ করতে হবে। আর এই বিজয় লাভ করতে হলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মানুষ গড়ার কারিগর। 

বিজয় দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো: সামিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। প্রথমেই আমি শ্রদ্ধাভরে সেই লাখো শহিদদের স্মরণ করছি যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজ পতাকা ও সোনার বাংলা পেয়েছি। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের অধিকার। আরেকটা আত্মত্যাগের পরিচয় পাওয়া যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। এই আন্দোলনে শহিদদের আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আর যারা অসুস্থ আছে তাদের সুস্থতা কামনা করছি। আমাদেরও সামনে একটি বড় আত্মত্যাগের সুযোগ রয়েছে। আমরা যদি সততা ও নিষ্ঠার সাথে আমাদের দায়িত্ব পালন করি তাহলে এটা হবে সবচেয়ে বড় আত্মত্যাগ। 

পরবর্তীতে উপস্থিত সবাই সকাল ৯ টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে এবং ১১ টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। বাদ যোহর সকল হলে শহিদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৯টা হতে জি. এম. এ. জি ওসমানী হলের মাঠে আন্তঃহল ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়। এছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকাল সাড়ে ৩টায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে বিজয় দিবস উদ্‌যাপনের সমাপ্তি ঘটে।


সর্বশেষ সংবাদ