প্রদীপের নিচেই অন্ধকার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা আত্মহত্যার পর আবারও আলোচনায় এসেছে দেশের উচ্চশিক্ষালয়গুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের বিষয়টি। নতুন করে প্রশ্ন জেগেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী শিক্ষার পরিবেশ এবং নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে। এর মধ্যে আলোচিত ঘটনাগুলো সবার নজরে আসলেও যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে তা যৎসামান্যই। ফলে অনেকটাই মুখ গুজে নানা নিপীড়ন দিনের পর দিন সহ্য করে যান নারী শিক্ষার্থীরা। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী নিপীড়নের এসব ঘটনার বেশিরভাগ সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় শিক্ষক ও তাদের সহকর্মীদের।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানির অভিযোগ করে উল্টো শাস্তি পেলেন বাউবির নারী কর্মকর্তা
তবে এরপরও যেসব ঘটনা সামনে আসে সেগুলোও সীমাবদ্ধ থাকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেই। তার খুব বেশি ব্যবস্থা দেশের উচ্চশিক্ষা কাঠামোয় গড়তে পারেনি দৃষ্টান্তমূলক কোনো ন্যায় বিচারের প্রতিমূর্তি। ফলে প্রদীপের নিচে জমতে থাকা নিকষ কালো অন্ধকার গাঢ় থেকে প্রগাঢ় হলেও নীরবে নিভৃতেই ঢুকরে কাঁদতে থাকে বিচারের বাণী। আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থাকে ন্যায়বিচার।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যা প্রতিরোধের বার্তা দিয়ে অবন্তিকা নিজেই বেছে নিলেন সে পথ
দেশের শিক্ষাবিদ, অপরাধ বিজ্ঞানী, আইন ও মানবাধিকার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিটি ঘটনা দৃষ্টান্তমূলক বিচার প্রতিষ্ঠা করতে না পারার কারণেই এসব ঘটনা বেড়েই চলেছে। এখনই এসব ঘটনার লাগাম শক্ত করে টেনে ধরা উচিত বলেও অভিমত তাদের।
আরও পড়ুন: রুমে ডেকে নিয়ে বিএসএমএমইউয়ের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
তারা বলছেন, দেশের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের অনুসারী শিক্ষক ও ছাত্রের দ্বারা কোনো নারী শিক্ষার্থী হেনস্তার শিকার হলে সেই শিক্ষক ও ছাত্র বিচারের আওতায় আসলেও তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। অভিযুক্তরা অনেক সময়ই ক্ষমতার কারণে পার পেয়ে যায়। তবে বিরোধী মতের শিক্ষক বা ছাত্র হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের অব্যাহতি বা বহিষ্কার করা হয়।
আত্মহত্যা প্রতিরোধের বার্তা দিয়ে জবি ছাত্রী অবন্তিকা নিজেই বেছে নিলেন সে পথ
এছাড়া কিছু ঘটনা বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টির পর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আমলে নেওয়া হয় না। বরং প্রশাসন অনেক সময় এমন অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
“কোনো অভিযোগ আসলেই সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি যোগাতে হবে সংশ্লিষ্টদের। সেই অভিযোগ জমাদানের পর একটি সময়সীমা বেঁধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সবার সামনে প্রকাশ করতে হবে-অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
দেশে শিক্ষক-ছাত্রের দ্বারা ছাত্রীর যৌন হয়রানি বা হেনস্তার বিষয়টি নতুন নয়। বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এছাড়াও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন নারী কর্মকর্তাকে হয়রানির ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাউবি)। তাছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন তার এক নারী সহকর্মী।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি রোধে হাইকোর্ট ২০০৯ সালে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেল গঠনের নির্দেশ দেয়। ওই নির্দেশে অভিযোগ গ্রহণ ও ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়। কোনো অভিযোগ পেলে সয়ংক্রিয়ভাবে সেল কাজ করার কথা।
“এখন আমাদের এসব অপরাধের বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে পারিবারিক ও সামাজিক ভাঙন, প্রযুক্তির কারণে মানুষের একাকিত্ব এবং বাস্তবতার বাইরে গিয়ে আবেগ দিয়ে অনেক বেশি তাড়িত হওয়াও এসব ঘটনার ক্ষেত্রে অপরাধীদের ক্ষেত্রে ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে-অধ্যাপক ড. তানিয়া হক
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষারে স্থান এবং এখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা কখনোই কাম্য নয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কোনো সমাজই শতভাগ অপরাধমুক্ত নয়, সবখানেই কোনো না কোনো ধরনের অপরাধ ঘটে থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এসব ঘটনা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত এবং এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আরও বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক
এসব ঘটনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আরও স্বচ্ছ হওয়া উচিত জানিয়ে ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কোনো অভিযোগ আসলেই সে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি যোগাতে হবে সংশ্লিষ্টদের। সেই অভিযোগ জমাদানের পর একটি সময়সীমা বেঁধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সবার সামনে প্রকাশ করতে হবে। এছাড়াও ক্ষমতা কাঠামোর বাইরে গিয়ে শিক্ষক নিয়োগে অন্যান্য মানবিক গুণাবলিও দেখা উচিত বলে মনে করেন এই শিক্ষাবিদ।
“শিক্ষকের কাছে একজন শিক্ষার্থী হবে সব থেকে নিরাপদের জায়গা। শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক একটা সময় যেরকম ছিল সেই জায়গাতেও আমরা অবক্ষয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি-মোছা. নুরজাহান খাতুন
বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে জানিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, এখন আমাদের এসব অপরাধের বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার। এছাড়াও তিনি এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে পারিবারিক ও সামাজিক ভাঙন, প্রযুক্তির কারণে মানুষের একাকিত্ব এবং বাস্তবতার বাইরে গিয়ে আবেগ দিয়ে অনেক বেশি তাড়িত হওয়াও এসব ঘটনার ক্ষেত্রে অপরাধীদের ক্ষেত্রে ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করে।
অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ
তবে আত্মহত্যা কিংবা নিজেকে শেষ করে দেওয়া কোনো ক্ষেত্রেই সমাধান হতে পারে না বলে আবারও জোর দিয়ে সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন এই জেন্ডার বিশেষজ্ঞ। একই সাথে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই সদস্য বলছেন—আমাদের আবারও শেকড়ের কাছে ফিরে যেতে হবে। সেই সাথে একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে একসাথে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোছা. নুরজাহান খাতুন বলেন, এ ধরনের ঘটনা যেভাবে যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে সমাপ্ত হওয়ার কথা, খুব কম ক্ষেত্রেই হয়ত ঘটনাগুলো নিরসনের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। আর এই কারণে যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো আরও বেশি ঘটছে।
আরও পড়ুন: ব্র্যাক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, ঢাবির আইবিএ শিক্ষক বরখাস্ত
রাজনৈতিক ও পারিবারিক অবক্ষয়কে দায়ী করে তিনি বলেন, শিক্ষকের কাছে একজন শিক্ষার্থী হবে সব থেকে নিরাপদের জায়গা। শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক একটা সময় যেরকম ছিল সেই জায়গাতেও আমরা অবক্ষয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।
“বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিগুলো রয়েছে তাদের কোনও কার্যক্রম চোখে পড়ে না। আবার এসব ঘটনায় মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিচার হয় না। এই বিচারহীনতার কারণে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে অবন্তিকার মতো এ ধরনের ঘটনা ঘটত না-মো. জিয়াউল কবির দুলু
শাস্তি না হওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনাগুলো বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সমস্যা নিরসনে তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো যাতে না আর না ঘটে সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নিয়ে অভিযুক্তকে শাস্তির আওতায় আনা উচিত। যারা এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে অন্যদের জন্য তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংক্রান্ত সেলগুলোকে আরও উন্মুক্ত করে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা এগিয়ে আসতে পারে এবং তাদের অভিযোগ নির্দ্বিধায় জানাতে পারে।
নারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যৌন নিপীড়নের প্রভাব ভুক্তভোগীকে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ করে। তাই এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের যেমন খুব সচেতন হওয়া উচিত পাশাপাশি যে নিজে ভিকটিম হচ্ছে সে ন্যূনতম কারো দ্বারা এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হলে তখনই তার এ বিষয়টাকে প্রকাশ করা উচিত। একইসঙ্গে শিক্ষকদের মোরালিটি বা নীতিনৈতিকতার জায়গায় আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন এই অপরাধ বিশেষজ্ঞ।
মো. জিয়াউল কবির দুলু
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এসব ঘটনায় আমরা অভিভাবকরা শঙ্কিত। শিক্ষকদের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। এসবের হাতেগোনা কয়েকটা প্রকাশ্যে আসছে। ভেতরে কত ঘটনা আছে সেই সবতো আর প্রকাশ্যে আসে না।
এ ধরনের ঘটনা যেভাবে যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে সমাপ্ত হওয়ার কথা, খুব কম ক্ষেত্রেই হয়ত ঘটনাগুলো নিরসনের প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। আর এই কারণে যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলো আরও বেশি ঘটছে-মোছা. নুরজাহান খাতুন, অপরাধ বিশেষজ্ঞ
“বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিগুলো রয়েছে তাদের কোনও কার্যক্রম চোখে পড়ে না। আবার এসব ঘটনায় মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিচার হয় না। এই বিচারহীনতার কারণে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে অবন্তিকার মতো এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।”
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে যৌন হয়রানি জবি শিক্ষকের, অভিযোগ নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে ভুক্তভোগী
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনা শিক্ষাঙ্গনকে চরম একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। আজ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত। মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুসারে গঠিত যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে এবং নারীর প্রতি অবমাননাকে সামাজিক অবমাননা হিসেবে দেখতে হবে। নারীর কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
অবন্তিকার আত্মহত্যা ও উত্তাল জবি
শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা নগরীর বাগিচাগাঁও ‘পিসি পার্ক স্মরণিকা’ নামের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় গলায় রশি বেঁধে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: পরামর্শের জন্য শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার ঢাবি ছাত্রী
আত্মহত্যার আগ দিয়ে করা তার ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায় তিনি যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অবন্তিকার সহপাঠী সিদ্দিক আম্মানকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে শোক র্যালি, মানববন্ধন আর প্রতিবাদ সমাবেশে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ছাত্রীকে চায়ের নিমন্ত্রণ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের
এরই মধ্যে জবির ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন একই বিভাগের ছাত্রী কাজী ফারজানা মীম। সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে এসে ওই ছাত্রী এ অভিযোগ করার পর বুধবার (২০ মার্চ) ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে দুই শিক্ষককে।
ওই ছাত্রী অভিযোগ, ডিপার্টমেন্টের এই শিক্ষক তাকে বন্ধুত্বের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিন বছর আগে। তাতে তিনি রাজি না হওয়ায় এখন তাকে শুধু ফেল করানো হচ্ছে। ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় তিন নাম্বার দেয়া হচ্ছে। তার কথা, আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছি। অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোনো বিচার পাইনি।
ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে আরও যত ঘটনা
১৪ মার্চ যৌন হয়রানির অভিযোগে ময়মনসিংহের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে বরখাস্ত এবং বিভাগীয় প্রধান রেজোয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক ছাত্রীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরীক্ষায় জরিমানা আদায়, নম্বর কম দেওয়া ও থিসিস পেপার আটকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ ওঠে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে। আর বিভাগীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রথমে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করলেও শিক্ষার্থীরা সেই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে আন্দোলন চালাতে থাকে। পরে চাপে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনায়েদকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও দীর্ঘদিন ধরে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন তার বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী। পরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে তার বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ সামনে আসে।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানির অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে ঢাবি অধ্যাপক নাদির
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তাঁরই এক ছাত্রীর করা যৌন নিপীড়নের অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত কমিটি। ১২ ফেব্রুয়ারি বিষয়টিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলে চিঠি পাঠিয়ে তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এই সময়ে অধ্যাপক নুরুলকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতেও চিঠিতে বলা হয়।
গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) সহযোগী অধ্যাপক ড. ওয়াসেল বিন সাদাতকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।
জানা যায়, ওয়াসেল বিন সাদাত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্ট টিচার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে এক ছাত্রীর থিসিস সুপারভাইজার ছিলেন তিনি। গত ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও ওয়াসেল সেই ছাত্রীকে থিসিসের কাজের কথা বলে আসতে বলেন। পরে আইবিএতে যৌন হয়রানি করেন। ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রমাণসহ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ করলে তা ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের কাছেও পাঠানো হয়। উপাচার্য আইবিএ এর পরিচালককে বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে বলেন। পরে সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ওয়াসেলকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
“আমরা ঘটনাগুলোর তদন্তের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সম্প্রতি আলোচিত ঘটনায়ও আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি-ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার
গত ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের শিক্ষক মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। জানা যায়, ওই বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্বের থিসিস করতে গিয়ে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন রসায়ন বিভাগের এক ছাত্রী। ওই ছাত্রী গুরুতর অভিযোগ করেন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, ল্যাবে একা কাজ করার সময় এবং কেমিকেল দেওয়ার বাহানায় নিজ কক্ষে ডেকে দরজা আটকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই শিক্ষক। পরে ওই অধ্যাপককে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ রীতি নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ একাধিক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও সনদ বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, ২০ ফেব্রুয়ারি যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর মাহমুদুর রহমান জনি ও একই বিভাগে সেসময় সদ্য নিয়োগ পাওয়া প্রভাষক আনিকা বুশরা বৈচির একটি অন্তরঙ্গ ছবি (সেলফি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং করা হয়। যেখানে বলা হয়, ‘এভাবেই ললিপপের ভেল্কিতে শিক্ষিকা হলেন আনিকা বুশরা বৈচি।’
একইসঙ্গে বিভাগের শিক্ষক পদে আবেদনকারী ৪৩ ব্যাচের আরেক ছাত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ কথাবার্তার অডিও প্রকাশ্যে আসে। যেখানে মাহমুদুর রহমান জনি ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানোর কথা শোনা যায়। এছাড়া জনির সঙ্গে ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রীর ‘অনৈতিক’ সম্পর্ক স্থাপন এবং ‘অশালীন’ চ্যাটিংয়ের ছবি ও তথ্য উঠে আসে। এর প্রেক্ষিতে জনির বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর একাধিক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে জনির বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
সহকর্মীর সঙ্গে ‘অশালীন’ আচরণের অভিযোগে গত বছরের ২৪ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হককে দুই বছরের জন্য অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর আগে গত বছরের মে মাসে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিভাগের ২ সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। বিভাগীয় শিক্ষকরা অভিযোগ করেন অধ্যাপক এনামুল হক ২১ মে বিভাগের এক নারী শিক্ষককে যৌন হয়রানি করেন। পরে ২৩ মে বিভাগের আরেক নারী শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে এনামুল হক একই আচরণের পুনরাবৃত্তি করলে, সেদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন ওই নারী শিক্ষক।
অভিযোগে বলা হয়, অধ্যাপক এনামুল হক কর্মস্থলে সহকর্মীদের যৌন হয়রানি করে নৈতিক স্খলন ঘটিয়েছেন। পরে ওই বিভাগের ৯ শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পৃথক আরেকটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে অধ্যাপক এনামুল হকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন তাঁর এক নারী সহকর্মী। শাহবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই মামলা করেন বিএসএমএমইউয়ের অন্য একটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওই নারী।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার
মামলার অভিযোগে ওই নারী বলেন, তিনি তিন বছর ধরে বিএসএমএমইউয়ের একটি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ওই অধ্যাপক নানা অজুহাতে বিভিন্ন সময় তার কক্ষে তাকে ডেকে নেন। তিনি একটি হাসপাতাল তৈরি করবেন জানিয়ে তাকে (ওই নারীকে) অংশীদার হতে অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে যৌন হয়রানি জবি শিক্ষকের, অভিযোগ নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে ভুক্তভোগী
একপর্যায়ে হাসপাতালের অংশীদারত্বের জন্য ২০ লাখ টাকাও নেন। অধ্যাপক বিভিন্ন সময় কক্ষে ডেকে নিয়ে তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। চাকরির নিরাপত্তার কারণে তিনি বিষয়টি চেপে যান। একপর্যায়ে অধ্যাপক তাঁকে কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন এবং ছবি তুলে রাখেন।
যৌন হয়রানির বিচার হয় না উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে
গত জানুয়ারির মাসে চাকরিতে যোগদানের শুরুতেই নিজ প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ সহকর্মীর হাতে যৌন হয়রানির শিকার হওয়া গাজীপুরের বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) এক নারী কর্মকর্তাকে সম্প্রতি অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকর্মীর হাতে যৌন হয়রানির পাশাপাশি র্যাগিং এবং নিপীড়নেরও শিকার হয়েছেন মর্মে ওই নারী কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও সে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
বিপরীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তাছাড়া এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪ কর্মকর্তাকে খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়েছে। আর বহাল তবিয়তেই রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অভিযুক্ত জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা।
অবন্তিকার আত্মহত্যায় জবির প্রধান ফটকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিবাদ সমাবেশ
৬ মার্চ বাউবির রেজিস্ট্রার ড. মহা. শফিকুল আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের স্বার্থে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (পরীক্ষা) রাহাত আরাকে (ছদ্মনাম) তার বর্তমান কর্মস্থল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগ হতে নারায়ণগঞ্জ উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রে বদলি করা হলো।
আরও পড়ুন: যোগ দিয়েই যৌন হয়রানির শিকার উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী কর্মকর্তা
অন্যদিকে, যৌন হয়রানির এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার নাম মো. মুজিবুল হক (৫৯)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
শুধু তাই নয়, গত বছরের শেষের দিকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই নারী কর্মকর্তা যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে এসব ঘটনার কোনো বিচার করতে পারেনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: পরীক্ষা দেওয়া থেকে যৌন হয়রানি— মীমের সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস জবি ভিসির
যৌন হয়রানি বিষয়ে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সবসময়ই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে থাকে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছেন, আমরা ঘটনাগুলোর তদন্তের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সম্প্রতি আলোচিত ঘটনায়ও আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
তবে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ শাখায় এক সিনিয়র কর্তকর্তা কর্তৃক এক নবীন অধস্তন নারী কর্মকর্তার হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে—তা জানাতে পারেননি তিনি। এমনকি ভুক্তভোগী ওই নারী কর্মকর্তাও জানেন না কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, এটা গোপন বিষয়, আপনাকে জানানো যাবে না। যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তিনি জানেন।